শিক্ষার্থীর চোখ পরীক্ষা করবেন প্রথমে শিক্ষক, পরে হাসপাতাল

ভিশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করবেন শিক্ষক নিজে, সমস্যা ধরা পড়লে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেবেন হাসপাতালে। শিক্ষকদের 'ভিশন পরীক্ষা' শোখানোর উদ্যোগ নিয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসাপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2022, 06:29 AM
Updated : 24 May 2022, 06:29 AM

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক নাহিদ ফেরদৌসী চাইছেন, চোখের সমস্যার কারণে কোনো শিক্ষার্থীর পড়াশোনা যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য এই উদ্যোগকে মডেল আকারে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে।

এ উদ্দেশে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সোমবার হাসাপাতালের হলরুমে স্কুল সাইট টেস্টিং প্রোগ্রামের আওতায় শিক্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন নাহিদ ফেরদৌসী।

প্রশিক্ষণে গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার ৩৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৬ জন শিক্ষক অংশ নিয়েছেন। পরে শিক্ষকদের হাতে সনদপত্রও তুলে দেওয়া হবে।

নাহিদ ফেরদৌসী বলেন, "প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা শিক্ষকদের দেখিয়ে দিয়েছি কিভাবে দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করতে হয়। শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ সময় শিক্ষকের সংস্পর্শে থাকেন। তাই এ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীর চোখের সব ধরনের রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারবেন।"

সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চশমা দেওয়া হবে বলেও জানান এই চিকিৎসক। তিনি বলেন, এ হাসপাতাল থেকে শিক্ষার্থীরা চোখের সব ধরনের চিকিৎসা পাবে, প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার সুবিধাও দেওয়া হবে শিক্ষার্থীদের।

প্রশিক্ষণ নিতে আসা গোপালগঞ্জ শহরের এস এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া খানম জানান, তার দীর্ঘ ৪০ বছরের কর্মজীবনে তিনি কখনও এ ধরনের প্রশিক্ষণ পাননি।

এই প্রশিক্ষণকে 'মূল্যবান' বর্ণনা করে তিনি বলেন, "এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আমি ভিশনের মাধ্যমে শিশুদের চোখের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করতে পারব। তাদের চোখে কোনো সমস্যা থাকলে এটির মাধ্যমে চিহ্নিত করব। পরে তাদের চিকিৎসার জন্য চক্ষু হাসপাতালে পাঠাব।"

এতে চোখের সমস্যার কারণে শিশুদের লেখাপড়া ব্যাহত হবে না বলেও মনে করেন এই শিক্ষক।

শহরের যুগশিখা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরি শংকর বিশ্বাস বলেন, "চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে চক্ষু হাসপাতাল আমাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এর মাধ্যমে আমরাই স্কুলের ছেলে-মেয়েদের চোখের সমস্যা নিরূপন করতে পারব।"

শিক্ষক হরি শংকর বিশ্বাসও মনে করেন, এ ধরনের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের চোখ ভালো থাকবে এবং তারা ভালোভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে।

"আগে চোখের সমস্য নিয়ে দু-একজন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করতে পারেনি। এখন আর এ সমস্যা থাকবে না", বলেন যুগশিখা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ কিশোর সাহা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম,  সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দিন বক্তব্য দেন।