ফুকরা লঞ্চঘাটের যুদ্ধে দেড়শ সেনা হারায় পাকিস্তান
মনোজ সাহা, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 25 Mar 2022 09:23 AM BdST Updated: 25 Mar 2022 09:26 AM BdST
নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে বাংলার প্রতিটি প্রান্তে এদেশের মানুষ পাক হানাদর বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করেছে। নিজেরা যেমন জীবন দিয়েছেন অকাতরে, তেমনি ধ্বংস করেছেন পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যদের।
গোপালগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের একটি উল্লেখযোগ্য লড়াই ছিল কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা লঞ্চঘাটের যুদ্ধ।
পাঁচ ঘণ্টার এই যুদ্ধে দেড় শতাধিক পাক হানাদার সৈন্য নিহত হন এবং ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এরপর পাকিস্তানি বাহিনী গ্রামে ঢুকে নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালায়।
কাশিয়ানীর ফুকরা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী সেদিনের যুদ্ধের বর্ণনা দেন, আর ফিরে যান পঞ্চশ বছর আগের ভয়াল সেই দিনগুলোতে।
১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর তিনটি লঞ্চে হানাদার বাহিনী কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়া ক্যাম্পে যায়। তারা সেখান থেকে এ পথেই ফিরবে বলে খবর আসে। সেইমতো তাদের লঞ্চে আক্রমণের পরিকল্পনা হয়।
“৩১ অক্টোবর হানাদার বাহিনীর তিনটি লঞ্চ ফুকরা লঞ্চঘাট অতিক্রম করার সময় আমরা আক্রমণ করি। এখানে হানাদার বাহিনীর সাথে আমাদের তুমুল যুদ্ধ হয়। মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর একটি লঞ্চ মধুমতি নদীতে ডুবিয়ে দেয়। এতে ১৫০ জন হানাদার সদস্যের সলিলসমাধি ঘটে।”
খবর পেয়ে ফের আরেকটি লঞ্চে হানাদার বাহিনী এসে এই মুক্তিযোদ্ধা দলকে পেছন দিক দিয়ে ঘিরে ফেলে। পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী চলা এ যুদ্ধে ১৩ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। হানাদার বাহিনীর আরও ১৫/২০ জনের মতো মারা যায়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হানাদার বাহিনী গ্রামে ঢুকে ৫০ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে।
লিয়াকত আলী বলেন, “এখানে আমরা স্মৃতিসৌধ করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করি। সরকার সে আবেদনে সাড়া দিয়ে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে দিয়েছে। প্রজম্মের পর প্রজম্ম মুক্তিযুদ্ধের গৌরবের ইতিহাস জানতে পারবে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।”
যুদ্ধের স্মৃতিকে ধরে রাখতে সরকার স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান গোপালগঞ্জের স্থানে স্মারক নির্মাণ করেছে। কোনো স্থানে এখনও নির্মাণ কাজ চলছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় স্মৃতিসৌধ ও স্মৃতি যাদুঘর নির্মাণ করেছে।
এ ছাড়া, গোপালগঞ্জ জেলার পাঁচ উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের গণকবর, বধ্যভূমি, যুদ্ধক্ষেত্রসহ মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
গোপালগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক বলেন, প্রায় ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় কোটালীপাড়ায় হেমায়েত বাহিনীর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি যাদুঘর, আশুতিয়ায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি যাদুঘর, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকহার গ্রামে গণহত্যার স্মৃতি রক্ষায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ, সুকতাইল, উলপুর যুদ্ধক্ষেত্র স্মৃতি ফলক ও কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা লঞ্চঘাট যুদ্ধক্ষেত্রে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হয়েছে।
“সদর উপজেলার গোবরা নীলার মাঠে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে জেলার পাঁচ উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের সব ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণ করা হবে।”
কোটালীপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার শেখ লুৎফর রহমান বলেন, “ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চল নিয়ে ‘হেমায়েত বাহিনী’ গঠন করা হয়। আমরা হেমায়েত বাহিনীর অধীনে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর, বরিশাল অঞ্চলে স্থানে যুদ্ধ করেছি।
“হেমায়েত বাহিনী স্মৃতি যাদুঘর করা হয়েছে। এ জন্য আমরা এ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।”
গোপালগঞ্জের মানিকহার গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা বলরাম ভদ্র বলেন, সদর উপজেলার মানিহার গ্রামে ৩০ এপ্রিল হানাদার বাহিনী নিরীহ গ্রাম বাসীর ওপর বর্বরোচিত হামলা করে। তারা সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের (সাবেক কায়েদে আজম মেমোরিয়াল কলেজ) দর্শন বিভাগের অধ্যাপক সন্তোস কুমার দাসসহ সাড়ে ৪শ গ্রামবাসীকে হত্যা করে।
গণহত্যার শিকার এসব মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ওই গ্রামের অনিল করের বাড়ি সংলগ্ন জমিতে সরকার একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে।
কাশিয়ানী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার আবুল কালাম উজির বলেন, এ সরকার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করছে। এতে নতুন প্রজম্ম বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা জানতে পারবে।
-
জাটকা ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠল
-
কক্সবাজার শহরে দস্যুতা-লুণ্ঠনের দায়ে ২ জনের যাবজ্জীবন
-
হবিগঞ্জে নদীতে গোসলে নেমে ২ কিশোরের মৃত্যু
-
কক্সবাজারে র্যাবের মামলায় ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
-
চুয়াডাঙ্গার সড়কে বাইক ও প্রাইভেট কার থামিয়ে ডাকাতি
-
গাজীপুরে ‘প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মারধর’ কিশোরীকে
-
শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার আসামির বিরুদ্ধে পিপির জিডি
-
গাইবান্ধায় গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামীসহ ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
- শিক্ষককে পিটিয়ে খুন: মামলায় জিতুর বয়স ১৬, র্যাব বলছে ১৯
- সিরাজগঞ্জে অস্ত্র হাতে ‘ভাইরাল’ সেই বায়েজিদ পিস্তলসহ গ্রেপ্তার
- বাঘাইড় বিক্রি করায় সুপার শপকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
- পদ্মা সেতু: যশোর তাকিয়ে কালনা সেতুর দিকে
- জর্দার পোটলা নিয়ে হজে, ভোগালেন সহযাত্রীদেরও
- বান্ধবীর সামনে ‘হিরো হতে’ শিক্ষককে পেটান জিতু
- পদ্মা সেতুর নাট খুলে গ্রেপ্তার ‘সাবেক শিবিরকর্মী’
- পদ্মা সেতুতে আবেগাপ্লুত ভারতের পর্যটক
- ‘হিরোগিরি দেখাতে গিয়ে’ শিক্ষক খুনের আসামি জিতু রিমান্ডে
- ‘ইউভেন্তুসে বেনজেমা-মদ্রিচের মতোই খেলবে দি মারিয়া’