দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে ভাড়ার সমন্বয়ের দাবিতে রংপুরে অটোরিকশা ধর্মঘট

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ভাড়া সমন্বয়সহ আট দফা দাবিতে রংপুর মহানগরীতে ধর্মঘট করেছেন রিকশা, রিকশাভ্যান ও অটোরিকশার চালকরা; এতে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2022, 09:20 AM
Updated : 21 March 2022, 09:20 AM

ছয়টি সংগঠনের মোর্চা ‘রংপুর মহানগর ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যান জাতীয় শ্রমিক ঐক্যজোটের’ ব্যানারে সোমবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আধাবেলার ধর্মঘটে চালক-শ্রমিকদের নগরীতে পিকেটিং করতেও দেখা গেছে।  

গত কয়েকদিন ধরে এই ধর্মঘটের পক্ষে নগরজুড়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছে সংগঠনগুলো।

সকাল থেকে ধর্মঘট শুরু হলে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, চাকরিজীবী, রোগী ও বয়স্কদের। যানবাহনের অভাবে গরমের মধ্যে তাদেরকে হেঁটে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়।

ধর্মঘটের বিষয়ে রংপুর মহানগর জাতীয় শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বাবু বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন থেকে আট দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলন করে আসছি। দাবি আদায়ে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো দাবি আমলে নেয়নি। তাই আমরা অটোরিকশা চালকদের ছয়টি সংগঠন একত্রিত হয়ে ধর্মঘট পালন করছি।”

শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে- নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূ্ল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে রিকশাভ্যান ও ব্যাটারিচালিত রিকশার ভাড়া বৃদ্ধি করে নগরের বিশেষ বিশেষ জায়গায় তালিকা টাঙানো, শ্রমিকদের ওপর অন্যায়ভাবে পুলিশের চাপিয়ে দেওয়া জরিমানা আদায় বন্ধ করা, ব্যাটারিচালিত রিকশার দুই হাজার নতুন লাইসেন্স প্রদান, নগরীর শাপলা চত্বর থেকে জিলা স্কুল মোড় পর্যন্ত প্রধান সড়কে রং দিয়ে চিহ্নিত করে অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে পৃথক লেন করা, রিকশাভ্যান ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চুরি, ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা এবং ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা।

ধর্মঘটের সময় নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়, মেডিকেল মোড়, কাচারি মোড়, পায়রা চত্বর, শাপলা চত্বর, জিলা স্কুল মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকদের পিকেটিং করতে দেখা গেছে। হঠাৎ করে রিকশা রাস্তায় চলে এলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

নগরীর শাপলা চত্বরে রুজিনা জামান রোজ নামের এক অভিভাবক দীর্ঘক্ষণ অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করে না পেয়ে হেঁটেই রওনা হন গন্তব্যে।

সাধারণ মানুষরা সব সময়ই হয়রানির শিকার হয় মন্তব্য করে এই অভিভাবক বলেন, “অটোরিকশার চালকরা এমনিতেই ভাড়া বেশি নেন। যেখানে সেখানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করে। অতিরিক্ত রিকশা ও অটোরিকশার জটে শহরে চলাচল করাই এখন দুষ্কর।“

এ ব্যাপারে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নগরীতে অটোরিকশা ও চার্জাররিকশার সংখ্যা বেড়ে গেছে। অথচ সিটি করপোরেশন থেকে নিবন্ধন (লাইসেন্স) দেওয়া রয়েছে আট হাজার ২৪০টি ব্যাটারিচালিত চার্জাররিকশা ও অটোরিকশার।

“আন্দোলনরত শ্রমিকদের কিছু দাবি আমার এখতিয়ারে না হলেও তাদের অন্য দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হব,“বলেন মেয়র।

এর আগে গত ১৩ মার্চ একই দাবিতে নগরীতে মানববন্ধন শেষে সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবর স্মারকলিপি দেয় অটোরিকশা চালকদের ছয়টি সংগঠন।