শাবি উপাচার্যের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিল শিক্ষার্থীরা

আমরণ অনশন চলার মধ্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2022, 03:14 PM
Updated : 23 Jan 2022, 03:15 PM

রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন।

এ সময় অনেক গণমাধ্যমকর্মীও সেখানে ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আন্দোলনকারী বলেন, “আমাদের অনশনরত ভাইবোনেরা কষ্ট করছেন; আর ভিসি ওদিকে আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন। এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না।“

“আমাদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে”, যোগ করেন তিনি।

এদিকে উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর পরই বাসভবন সংলগ্ন অতিথি ভবন ও শিক্ষক ডরমেটরির বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন হতে দেখা গেছে।

বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক তুলসী কুমার দাস কথা বলছিলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।

পরে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ মুর্হূতে উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।

“শিক্ষার্থীরা যাতে সহিংস না হয়, সেজন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।“

এর আগে বিকালে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

আন্দোলনকারী ইয়াছির সরকার তখন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, “পরিস্থিতি দেখে আমরা ব্যবস্থা নিব। পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে আমরা আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।” 

‘কঠোর অবস্থানটি’ কী হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "বাসভবনের সব যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দিব।”

এরপরই বিদ্যুৎ সংযোগের এ ঘটনা ঘটল।

বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। ১৬ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

ওইদিন বিকালে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েনের প্রতিবাদ করলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় পুলিশ। ধাওয়া-পাল্টার এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিলেও তা উপেক্ষা করে উল্টো উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন তারা।

ওই ঘটনায় পুলিশ ‘গুলি বর্ষণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটের অভিযোগে’ অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে।

আরও পড়ুন