কুমিল্লায় কাউন্সিলর হত্যা: এক আসামি গ্রেপ্তার

কুমিল্লা সিটির কাউন্সিলর সৈয়দ  মো. সোহেলসহ দুইজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2021, 06:29 AM
Updated : 24 Nov 2021, 06:37 AM

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে সুমন মিয়া (৩২) নামে এই আসামিকে বুধবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয় বলে কোতোয়ালি থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম জানান।

সোমবার বিকালে শহরের পাথুরিয়াপাড়ায় ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেলের সিমেন্টের দোকান থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে হামলা চালায় একদল মুখোশধারী। সেখানে থাকা সোহেল এবং তার সহযোগী ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সভাপতি হরিপদ সাহাকে তারা গুলি করে হত্যা করে।

খুনিদের এলোপাতাড়ি গুলিতে আহত হন আরও চারজন। তাদের কুমিল্লা মেডকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ওসি আনোয়ারুল আজীম বলেন, কুমিল্লা শহরের সুজানগর এলাকার কানু মিয়ার ছেলে সুমন এজাহারে উল্লিখিত ৪ নম্বর আসামি। সকালে কুচাইতলীতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলেন সুমন। সেখান থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

হত্যাকাণ্ডে সুমনের সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় কাউন্সিলর সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন মঙ্গলবার রাতে ‘চিহ্নিত এক মাদক ব্যবসায়ীসহ’ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার এজহারে ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করা হয় সেখানে।

মামলার এজাহারে কী আছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি পুলিশ।

তবে বাদী সৈয়দ মো. রুমন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাদকবিরোধী অবস্থান নেওয়ায় এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে।  এজাহারে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।”

এজাহারে যে ১১ জনের নাম এসেছে, তাদের প্রথমেই আছেন কুমিল্লা শহরের সুজানগর এলাকার জানু মিয়ার ছেলে শাহ আলম (২৮), যার বিরুদ্ধে মাদকের কারবারসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে থানায়।

রুমন দাবি করেন, গুলিবিদ্ধ হরিপদ সাহাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি শাহ আলমকে ‘চিনতে পারার কথা’ বলে গেছেন।

নাম উল্লেখ করা বাকি আসামিরা হলেন: স্থানীয় রফিক মিয়ার ছেলে মো. সাব্বির হোসেন (২৮), কানু মিয়ার ছেলে সুমন (৩২), নূর আলীর ছেলে জিসান মিয়া, কানাই মিয়ার ছেলে রনি (৩২), নবগ্রাম এলাকার সোহেল ওরফে জেল সোহেল (২৮), সায়মন (৩০), সংরাইস এলাকার সাজন (৩২), মাসুম (৩৫) তেলিকোনা এলাকার আশিকুর রহমান রকি (৩২) ও সুজানগর বৌবাজার এলাকার আলম (৩৫)।

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল ২০১২ ও ২০১৭ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি প্যানেল মেয়র ছিলেন।

কাউন্সিলর সোহেলকে যেখানে হত্যা করা হয়, তার আধা কিলোমিটার দূরে সুজানগর এলাকার সীমানাপ্রাচীর ঘেরা একটি জায়গা থেকে মঙ্গলবার দুটি এলজি, একটি পাইপগান, দেড় ডজন অবিস্ম্ফোরিত হাতবোমা, তিনটি কালো ব্যাগ, দুটি কালো জামা ও ১২ রাউন্ড বুলেট উদ্ধার করার কথা জানায় পুলিশ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবারও ঘটনাস্থল ও আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এখনও পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি।

জেলার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, “ঘটনাটি সুচারুভাবে তদন্ত করছে পুলিশের একাধিক দল। বিভিন্ন আলামত জব্দ করার পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে দ্রুত তদন্ত কাজ  চালিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত আসামি শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।”

র‌্যাবের ক্রাইম প্রিভেনশন ইউনিটও এ বিষয়ে তদন্ত করছে জানিয়ে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, হামলাকারীদের দ্রুতই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে তারা আশা করছেন।