বাল্যবিয়ের শিক্ষার্থীদের ‘ক্লাসে ফেরানোর চেষ্টা চলছে’: দীপু মনি

করোনাভাইরাস মহামারীর সময় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বাল্যবিয়ে হওয়াদেরও ক্লাসে ফেরানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2021, 04:31 PM
Updated : 21 Oct 2021, 04:31 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।

দীপু মনি বলেন, “করোনা অতিমারির কারণে কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখা গেছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাল্যবিয়ে বেশি হয়েছে। সেই জায়গায় আমরা চেষ্টা করছি, সেই বাল্যবিয়ে হয়ে যাওয়া মেয়েদের আবার ক্লাসে ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি।”

তাদের অনেকেই স্থানান্তরিত হয়ে গেছে; অতিমারীর কারণে এক শহর থেকে আরেক শহরে বা শহর থেকে গ্রামে চলে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “স্থানান্তরিত হলেও তারা যেখানেই আছে সেখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে তারা ক্লাসে অংশগ্রহণ করেন তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।”

বিকাল মন্ত্রী অধিভুক্ত কলেজসমূহে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রাম উদ্বোধন করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয় থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফরমে তিনি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

পরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “এ মুহূর্তে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাসের সংখ্যা বাড়াতে পারছি না। নতুন বছর শুরু হলে এবং তখন সংক্রমণ আরো কমে গেলে আমরা আশা করছি ক্লাসের সংখ্যা বাড়াতে পারব।”

তিনি বলেন, এখন যে অবস্থা আছে তাতে সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর ক্ষেত্রে অভিভাবকরা যে পুরোপুরি স্বস্তিতে আছে - তা নয়। সে কারণে স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার কোথাও কোথাও কম আছে। আস্তে আস্তে যখন সব ক্লাস শুরু হবে তখন আবার তাদের উপস্থিতি বাড়বে- এটা নিশ্চিত।

“করোনাকালে কিছু শিক্ষার্থী হয়তো ঝরে গেছে। করোনা অতিমারিতে কতটা আসলে ঝরে গেছে এবং কী কারণে ঝরে গেছে সেটা আমাদের নিরূপণ করতে হবে। সেটা নিয়ে আমরা এখনই কাজ করছি।”

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আরও কিছুদিন গেলে আমরা বুঝতে পারব সত্যিকার অর্থে কতজন ঝরে পড়েছে। আর কতজন করোনা অতিমারির কারণে কিংবা ঋতু পরিবর্তনজনিত অসুস্থতার কারণে হয়তো ক্লাসে উপস্থিতির হার কম। আর কিছুদিন গেলে আমরা বুঝতে পারবো সত্যিকার কোন কারণে কতজন ক্লাসে আসছে না কিংবা কতজন আসলে ঝরে গেছে। তখন প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষে স্পেসিফিক ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে। আমরা এ বিষয়টি দেখছি।”

অনার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এ সিদ্ধান্ত শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপর নির্ভর করে না। তাদের এমপিওভুক্তির বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তৃতীয় শিক্ষকের ব্যাপারে আমরা এ মুহূর্তে কোনো সুখবর দিতে পারছি না। তবে এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি।”  

একইদিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কবুতর ও বেলুন ওড়ানো, সিনেট হলরুমে কেক কাটা এবং আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনি।

আরও অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, উপাচার্য অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান।

উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. ফয়জুল করিম প্রমুখ।