ফেনীতে স্বর্ণ ডাকাতি: আরেক পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

ফেনীতে ২০টি স্বর্ণের বার ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের আরেক সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন।

নাজমুল হক শামীম ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2021, 07:18 PM
Updated : 22 Sept 2021, 07:18 PM

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাকে নোয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করেছে।

বুধবার ফেনীর বিচারিক হাকিম ধ্রুব জ্যোতি পালের আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গ্রেপ্তার এসআই ফিরোজ আলম চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি জোন ডিবিতে কর্মরত ছিলেন।

পিবিআই পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, মামলার তদন্তে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কোতোয়ালি জোন ডিবির এসআই ফিরোজের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে তার গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শাহ আলম আরও জানান, ঘটনার দিন এসআই ফিরোজ চট্টগ্রাম থেকে ফেনীর ডিবির ওসিকে স্বর্ণের বিষয়ে তথ্য দেন। জব্দকৃত মোট স্বর্ণ থেকে একটি ভাগ এসআই ফিরোজ পাবেন বলে তাদের মধ্যে কথা হয়েছিল। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন।

“অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন- এমন তথ্য পেয়ে তাকে নোয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

এদিকে এসআই ফিরোজকে কারাগারে নেওয়ার সময় বুধবার বিকালে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তিনি নির্দোষ। তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ঘটনার দিন তিনি খবর পেয়ে ডিবির ফেনীর ওসিকে শুধুই স্বর্ণ পাচারের তথ্য জানিয়েছিলেন।

পিবিআই পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, চট্টগ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাশ গত ৮ অগাস্ট রোববার চট্টগ্রাম থেকে ২০টি স্বর্ণের বার নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনী ফতেহপুর রেলওয়ে ওভারপাসের নিচে ফেনী জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল তার গাড়ির গতিরোধ করে। গাড়ি তল্লাশির এক পর্যায়ে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা তার কাছ থেকে ২০টি স্বর্ণের বার ছিনিয়ে নেন। ওই ঘটনায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল ফেনী পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

“পরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগকারী চার পুলিশ কর্মকর্তাকে শনাক্ত করেন। এ সময় চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা তাদের সাথে থাকা অপর দুইজন পুলিশ কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেন।”

তিনি জানান, ওই সময়ে অভিযুক্তরা স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১৫টি স্বর্ণের বার ছিনিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম ভূইয়ার বাসা থেকে ১৫টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।

ওই ঘটনায় গত ১০ অগাস্ট রাতে ফেনী মডেল থানায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক, তিন এসআই ও দুই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা দায়ের করেন চট্টামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাশ।

মামলার এজহারনামীয় আসামি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বরখাস্ত এসআই মো. সাইফুল ইসলাম ভূইয়া, বরখাস্ত এসআই মোতোহের হোসেন, এসআই মিজানুর রহমান, এসআই নুরুল হক, এএসআই অভিজিৎ বড়ুয়া ও এএসআই মাসুদ রানা কারাগারে রয়েছেন।

ওই মামলায় ইতোমধ্যে তিন দফা রিমান্ড শেষে গোয়েন্দা পুলিশের বরখাস্ত পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম ভূইয়া ও গ্রেপ্তার অপর তিন এসআই এবং দুই এএসআই দুই দফা রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন।

অপরদিকে মামলার বাদী গোপালের সাবেক ব্যবসায়িক অংশীদার ও পুলিশের সোর্স সমিদুল আলম ভুট্টো ডাকাতির ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। ডিবি পুলিশের রিকুইজিশান করা দুই গাড়ি চালক সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।