বাগেরহাটে তিন মাসে ১০৪ মৃত্যু, ৯৫% ছিলেন টিকার বাইরে

বাগেরহাটে গত তিনমাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শতকরা ৯৫ শতাংশেরই ভ্যাকসিন নেওয়া ছিল না বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2021, 06:58 AM
Updated : 8 August 2021, 07:04 AM

গত জুন মাস থেকে বাগেরহাট জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। ওই সময়ে বেশ কয়েকটি উপজেলায় শনাক্তের হার ৭২ থেকে ৭৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। আর সারা জেলায় শনাক্তের হার ছিল ৫৬ শতাংশ।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, “আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে শতকরা ৯৫ জন রোগীর ভ্যাকসিন নেওয়া ছিল না। যার কারণে তাদের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে। আর যাদের ভ্যাকসিন দেওয়া ছিল তারা অল্প সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

“যারা ভ্যাকসিন নেননি তাদের মধ্যে মৃত্যুহারও বেশি ছিল। যেখানে প্রথম ঢেউয়ে জেলায় মৃত্যু হয় ২৬ জনের সেখানে দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর গত তিনমাসে মৃত্যু হয়েছে একশ চারজনের।”

স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, গত দুই মাসে বাগেরহাটে করোনাভাইরাসে ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে উপসর্গে মারা গেছেন আরও অন্তত ৬০ জন। গত দুই মাসে ৫০ শয্যার কোভিড হাসপাতালে ভর্তি রোগীর চাপও অনেক বেড়ে যায়; এ সময় ৫০ শয্যার বিপরীতে প্রায় ৭০ জনের মত রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে বাগেরহাটে করোনাভাইরাস শনাক্তের গড় হার ২৩ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করছে। যা আগে ৫৬ শতাংশের উপরে ছিল। 

তবে এই হারও কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অনেক বেশি উল্লেখ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সবাইকে আরও বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

সিভিল সার্জন বলেন, বাগেরহাটে সব উপজেলাগুলোতে নিয়মিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত জেলার ৪২ হাজার মানুষকে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। আর প্রথম ডোজ দে্ওয়া হয়েছে ৯৮ হাজার ৭২৫ জনকে।

“শহরের লোকজন সহজে ভ্যাকসিন নিতে পারলেও গ্রামের বয়স্করা ভ্যাকসিন নিতে পারছেন না। তাদের কথা চিন্তা করে সরকার গ্রামে মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।”

ইউনিয়ন পর্যায়ে একদিনে ৮১টি কেন্দ্রে ৪৪ হাজার ৪৬৮ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে বলে এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান।

তিনি বলেন, “যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে যা প্রমাণিত। আর ভ্যাকমিন গ্রহণের পর যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের শরীরে গুরুতর কোন অসুবিধা হয়নি।”

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে জেলার হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগীর ভর্তির চাপ কমেছে। গত তিন সপ্তাহের মত হল সংক্রমণের হার কমের দিকে যেতে শুরু করেছে। সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই।

বাগেরহাট প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৩২৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ৪৮১ জন সুস্থ হয়েছেন। আর জেলায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩০ জন।