মঙ্গলবার জেলার গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র জানায়, গত চব্বিশ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ফুলছড়ি উপজেলার বালাসিঘাট পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার এবং করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালি পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
তবে ঘাঘট নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে এবং তিস্তা নদীর পানি সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার কমেছে।
এদিকে, যমুনা নদীর ভাঙনে ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়ারভিটা এবং ভুষিরভিটা গ্রামে গত চব্বিশ ঘণ্টায় ১২টি বাড়িসহ প্রায় ৩২ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
উড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন জানান, প্রতিদিন এসব গ্রামের ছয় থেকে আট ফুট এলাকা ভেঙে যাচ্ছে।
“এভাবে ভাঙতে থাকলে অল্পদিনের মধ্যে গোটা গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।”
এসব ভাঙন রোধে ‘জরুরি ভিত্তিতে’ জিও ব্যাগ এবং বালির বস্তা ফেলা হবে বলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।“
মঙ্গলবার সরেজমিনে এসব গ্রামের নদী ভাঙা মানুষের দুর্ভোগের চিত্র দেখা গেছে। কেউ ঘরবাড়ি কেউ আসবাবপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ নদী থেকে দূরে নতুন করে একচালা ঘর তুলছেন।
কটিয়ারভিটা গ্রামের কৃষক শহিদুল মিয়া (৫০) নিজের ভাষায় বলেন, “হামার ঘরে জমাজমি, বাড়িভিটা সগি আচিলো। নদী ভাঙি হামরা ঘরে একন কিচুই নাই। সোরকার জানি নদি ভাংগার হাত থাকি হামার ঘরোক বাচায়।”
একই গ্রামের কৃষক আবদুল মোন্নাফ (৪৫) জানান, গত চারদিনে যমুনার ভাঙনে তার তিনটি ঘরসহ বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। ঘরের জিনিসপত্রও ভেসে গেছে।
তবে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
যমুনার ভাঙনে ভুষিরভিটা গ্রামের কৃষক আবদুল বাসেতের (৫৫) ‘দুইটি টিনের ঘরসহ বসতভিটা এবং তিনবিঘা’ জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।
তবে নদীর পানি বাড়লেও পানি উন্নয়ন বোর্ডে কর্মকর্তা বলছেন, সব নদীর পানি বিপদসীমার অনেক নিচ থাকায় ‘আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই’।