কোভিড: রাজশাহী হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ মৃত্যু

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজন কোভিড-১৯ এ মারা গেছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

রাজশাহী অফিসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2021, 10:56 AM
Updated : 25 May 2021, 11:02 AM

এদিকে ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।

মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী  জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চারজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

মৃতদের মধ্যে দুইজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের, একজন রাজশাহীর ও একজন পাবনার।

এছাড়া গত তিনদিনে এ হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত ১ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭১ জন ও ১১২ জন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আক্রান্তদের বেশিরভাগ চিকিৎসা নিচ্ছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

সেখানকার রোগীদের শারীরিক অবস্থাও দ্রুত অবনতি হচ্ছে বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক।

মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৫৪ জন করোনাভাইরাস রোগীর মধ্যে ৮৬ জন চাঁপাইনবাবগঞ্জের এবং ৪৮ জন রাজশাহীর। এদের মধ্যে ১৪ জন আইসিইউতে রয়েছেন; যাদের বেশীরভাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের।

এর আগে সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৮২ জনের শরীরে এবং রাজশাহীতে ৫৪ জনের শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

শামীম বলেন, “করোনাভাইরাসের প্রথম ধাপে হাসপাতালে সর্বোচ্চ আক্রান্ত রোগী ছিল ৯৬ জন। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩৬ জনে। ঈদের আগে সেটি কমে এসেছিল ৭১ জনে।

“কিন্তু ঈদের পর আবার বাড়তে থাক; যা একদিনে ১৬৮ জনে দাঁড়ায়। রোগী দের বেশীর ভাগই চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনাভাইরাসের শনাক্তের হার ৫৫ ভাগ জানিয়ে তিনি বলেন, এ হার রাজশাহীতেও কম নয়। বর্তমানে রাজশাহীতে শনাক্তের হার ৪৫ ভাগ। করোনাভাইরাসে  আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হাসপাতালে আরও একটি ওয়ার্ড বাড়ানো করা হয়েছে।

“বর্তমানে পাঁচটি ওয়ার্ডে তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও আরও একটি ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে।”

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সোমবার মধ্যরাত থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাতদিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

রাজশাহীতেও লকডাউন ‘প্রয়োজন’ বলে উল্লেখ করে শামীম ইয়াজদানী বলেন, “এখানে বর্তমানে লকডাউন দেওয়া না গেলেও স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।

“আর রাজশাহীর রোগীদের চেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোগিদের অবস্থা দ্রুত অবনতি হচ্ছে। ফলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ভারতীয় ধরন আছে কি না তা পরীক্ষা করতে ৪৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরএ পাঠানো হয়েছে। তবে ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি। তাদের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পেলে এ বিষয়ে পরিবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।”

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাউয়ুম তালুকদার বলেন, রাজশাহীর সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোন মানুষ রাজশাহী আসবে না। রাজশাহীর কেউ চাঁপাইনবাবগঞ্জে যেতে পারবে না।

“এছাড়াও করোনার সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে প্রতিটি উপজেলাতে মাইকিং করে প্রচার চালানো হচ্ছে। এরপরও যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসে তখন পরবর্র্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

তিনি বলেন, রাজশাহী সদর হাসপাতাল এখন বন্ধ রয়েছে। সেটি চালু করে করোনা ইউনিট করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।