বুধবার দুপুরে বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জেলার ডিসি মেয়েটিকে তার মায়ের কোলে তুলে দেন।
ডিসি মো. শাহরিয়াজ বলেন, “অভাবের কারণে ভ্যানচালক দম্পতি কিছু সুবিধা নিয়ে মেয়েটিকে দত্তক দিয়েছিলেন।
“আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে তুলে দিয়েছি।”
ওই দম্পতিকে নগদ টাকা, খাদ্য সামগ্রী এবং একটি ভ্যান উপহার দেওয়া হয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে তাদেরকে নতুন ঘরও উপহার দেওয়া হবে বলেন তিনি।
শিশুটির মা ফুলজান বেগম জানান, অভাবের সংসার চালাতে গিয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েন। দাদন ব্যবসায়ীদের টাকা শোধ করতে গিয়ে নিরুপায় হয়ে একমাত্র মেয়েকে এক কলেজ শিক্ষক দম্পতির কাছে হস্তান্তর করেন।
এর বিনিময়ে তাদেরকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকায় ঋণ শোধ করেছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বড়াইগ্রাম উপজেলার কয়েন গ্রামের ভ্যানচালক রেজাউল করিম এবং স্ত্রী ফুলজান বেগমের সংসারে ৮ ও ৫ বছর বয়সী ছেলের পর প্রথম মেয়ের জন্মায়। শখ করে মেয়েটির নাম রাখেন চাঁদনী খাতুন।
তবে ঋণের টাকা শোধ করার জন্য জন্মের ২২ দিন পর মেয়েকে পাবনার এক কলেজ শিক্ষক দম্পতির কাছে ‘বিক্রি করে দিতে’ বাধ্য হন। গত রোববার মেয়েটিকে হস্তান্তর করার পর মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ মেয়েটির বাবা ও দুই দাদন ব্যবসায়ীকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, শিশুটিকে কিছু অর্থের বিনিময়ে দত্তক দেওয়া হয়েছিল। অর্থ পরিশোধের সহযোগিতা পাওয়ায় ওই দম্পতি দত্তক গ্রহিতাদের কাছ থেকে মেয়েটিকে ফিরে পেয়েছেন। পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে।
বুধবার শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আনা হয়। দুপুরে জেলার ডিসি সেখানে উপস্থিত হয়ে শিশুটিকে তার মায়ের কোলে তুলে দেন।