পারদ নেমে সাড়ে পাঁচে, হু-হু শীতে কাঁপছে কুড়িগ্রামবাসী

শৈত্য প্রবাহে কুড়িগ্রামে দেশে সবচেয়ে কম ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2021, 08:21 AM
Updated : 31 Jan 2021, 08:21 AM

রোববার সকাল ৬টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কুড়িগ্রামে রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার।

তিনি আরও জানান, রোববারের এই তাপমাত্রা এ মৌসুমেরও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

“হঠাৎ করেই কুড়িগ্রামে তীব্র শৈত্য প্রবাহ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই অবস্থা আরও ৩ থেকে ৪ দিন থাকতে পারে।”

রোববার দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে রয়েছে চারদিক। রাতভর ছিপছিপ বৃষ্টির মতো শিশির ঝরেছে ।

প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা বের হচ্ছে না মানুষ। তবে প্রচণ্ড ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে অনেক শ্রমজীবী মানুষ কাজে বের হয়েছেন, তাদের অবস্থা এখন জুবুথুবু। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে ভুগছেন তাদের অনেকে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ফারাজী পাড়ার কৃষক আবুল হোসেন ও মোজাহার আলী জানান, তীব্র শীতে কিছুক্ষণ পানিতে কাজ করলে হাত-পা অসাড় হয়ে যাচ্ছে।

যারা দিনমজুর তারা কাজ-কর্ম করতে না পেরে সমস্যায় পড়ে গেছে বলেন তারা।

এই গ্রামের ফাতেমা বেগম, লাইলি ও আনোয়ারা জানান, ঠাণ্ডায় রাতে ঘুম হয় না। পিঠ অসাড় হয়ে যায়। সন্তানরা সর্দি-কাঁশিতে আক্রান্ত হচ্ছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, সরকারিভাবে শীতার্তদের জন্য ৫৭ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বেসরকারিভাবে বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

তবে জেলা প্রশাসন ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে মনে করেন অনেকে। এতে দিনমজুর, নিম্ন আয়ের ও চরাঞ্চলের মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে।

আলুর ক্ষেত ও বোরোচাষে শীত

তীব্র শীতে আলুর ক্ষেত ও বোরোচাষ নিয়ে কৃষকের দুশ্চিন্তার কথা জানালেও কৃষি বিভাগ বলছে ভিন্ন কথা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে আলু ক্ষেতের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও আগাম স্প্রের কারণে ক্ষতির সম্ভাবনা কমে গেছে।

এছাড়াও শীতের কারণে সাময়িকভাবে বীজ ধান রোপনে কিছুটা বিলম্ব হলেও তাতে কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করেন তিনি।

চলতি বছর জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১২ হাজার হেক্টর জমিতে নির্ধারণ করা হয়েছে এবং এবার প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে হাইব্রীড বীজধান লাগানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন,  “শীত কেটে গেলে টার্গেট পূরণ হবে। “