বন্যার ধকল কাটিয়ে না উঠতেই এ কারণে ব্যাপক ফসলহানির শঙ্কা করছেন কৃষকরা। অনেকে ফসল ঘরে তোলার আশা এরই মধ্যে ছেড়েও দিয়েছেন।
বগুড়া কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দুলাল হোসেন জানান, শেষ বন্যায় বাঙ্গালীর পানি বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সারিয়াকান্দী এবং গাবতলী ও শেরপুর উপজেলায়।
“সম্প্রতি বৃষ্টি এবং হালকা বাতাসে কী পরিমাণ ধান জমির মাটিতে নুয়ে পড়েছে তার হিসাবও মাঠ থেকে আসেনি।”
তবে কৃষকদের সাথে একমত হয়ে তিনি বলেন, জমির পানিতে নুয়ে পড়লে ধান পচে যাবে।
পচে যাওয়ার শঙ্কায় অনেক কৃষক কাচা ধানসহ রোপা আমন কেটে কেউ গবাদী পশুকে খাওয়াচ্ছে, কেউবা পশুখাদ্য হিসেবে বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করছে।
সারিয়াকান্দী উপজেলার ভেলা বাড়ীর কৃষক লিটন জানালেন, বন্যায় বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধিতে নিচু জমির ধান এমনিতেই নষ্ট হয়ে গেছে। ওই পানি কমতে না কমতেই কয়েকদিনের মুষল ধারায় দিন-রাত বৃষ্টি এবং হালকা বাতাসে উচু জমির ধানও পড়ে গেছে।
“কোনো জমিতে অর্ধেক ফসলও পাওয়া যাবে না।”
ধুনটের গোসাই বাড়ীর লিয়াকত আলী লিটন জানান, চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। এক বিঘার বেশি জমির ধান বৃষ্টি আর বাতাসে পানিতে হেলে পড়েছে। পচে যাওয়ার ভয়ে তিনি কাঁচা ধানসহ কেটে গবাদি পশুকে খাওয়াচ্ছেন।
তিনি বলেন, “কী করব? জমিতে থাকলে তো পচে যাবে।
“তাই কেটে বাজারে বিক্রি করছি। যা পাই তাই লাভ।”
ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোর্শেদুল ইসলাম জানান, ধুনটে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৭৮০ হেক্টর। বন্যায় বাঙ্গালী নদীর কারণে ৬৩ হেক্টর ক্ষতি হয়েছে। যমুনার বন্যায় ২০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
“গেল বৃষ্টিতে ক্ষতির পরিমাণ এখনও মাঠ থেকে আসেনি।”
তবে বৃষ্টি আর বাতাসে নুয়ে পড়া ধানগাছে ছত্রাক নাশক ওষুধ ছিটালে অনেকটা ধান রক্ষা পাবে বলে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।