বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ২১৭ দশমিক সাত মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।
প্রথম শ্রেণি এই আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর বলেন, “যা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।”
নিম্নচাপের প্রভাবে এই অতিবৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি জানান, গত বছর ২২, ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ২৩, ১৬ ও ২৪ দশমিক ছয় মিলিমিটার। তবে গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুর পর্যন্ত হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
কামাতপাড়া মহল্লার হারুন উর রশিদ হিমেলসহ শহরের একাধিক বাসিন্দা জানান, এমন বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে শহরের কামাতপাড়া, কায়েতপাড়া, পূর্ব ইসলামবাগ, ডোকরোপাড়া, তেঁতুলিয়া রোডসহ পাড়া-মহল্লার সড়কগুলো পানিতে ডুবে যায়।
ড্রেন দিয়ে পানি ভালোভাবে নিষ্কাশন না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বললেন তারা।
পঞ্চগড় পৌর মেয়র তৌহিদুল ইসলাম বলেন, অতিবৃষ্টিতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি পানি ড্রেন দিয়ে যেতে না পারায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া অনেকে বাড়িঘরের আবর্জনা ড্রেনে ফেলায় পানি প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে।
ড্রেন পরিষ্কার করে পানি অপসারণের কাজ অব্যাহতভাবে চলছে বলেও জানান তিনি।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিকাল পর্যন্ত বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অনেক বাড়িঘরে পানি উঠেছে।
এছাড়া সদর হাসপাতাল, জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্য়ালয় প্রাঙ্গণে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।
সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বলেয়াপাড়া গ্রামের অর্ধ শতাধিক বাড়িতে পানি ওঠায় দিনেরবেলা রান্নাবান্না বন্ধ ছিল জানিয়ে ওই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, সামান্য বৃষ্টিতেই গ্রামের অনেকের বাড়িতে পানি ওঠে। রান্নাঘরে পানি জমে থাকায় তারসহ অনেকের বাড়িতে দিনের বেলায় রান্না হয়নি। আশেপাশের গ্রামের প্রতিবেশী ও স্বজনদের পাঠানো খাবার খেয়ে দিন কাটাতে হয়েছে।
তিনি জানান, পানি সরানোর জন্য রাস্তার ওপর কয়েক বছর আগে একটি রিং কার্লভার্ট থাকলেও তাতে কাজ হয় না। এজন্য বুধবার দীর্ঘ সময়তাদের জলাবদ্ধতায় ভুগতে হয়।
রিং কার্লভার্ট ভেঙে এখানে বক্স কার্লভার্ট নির্মাণ করা হলে জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।
সন্ধ্যায় সদর উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খলিলুর রহমান জানান, গুদামের মেঝের নিচে কোথাও লিক হয়ে। ভেতরে পানি ঢুকে নিচের সারির শতাধিক চালের বস্তা সামান্য ভিজে ড্যাম্প হয়ে গেছে।
ড্রেন দিয়ে পানি অপসারণ না হওয়ায় এমন হয়েছে বলছেন তিনি।