বগুড়ায় যৌন হয়রানির অভিযোগে কলেজশিক্ষক বরখাস্ত

প্রাক্তন ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ফেইসবুকে প্রকাশ হওয়ার পর বগুড়ার দুই কলেজ শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2020, 12:28 PM
Updated : 29 August 2020, 12:28 PM

শুক্রবার জেলা প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।

বরখাস্ত শিক্ষকরা হলেন বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলার প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও ইংরেজির প্রভাষক আব্দুল মোত্তালিব।

হয়রানির অভিযোগ তুলে এই দুই শিক্ষকের প্রাক্তন এক ছাত্রী ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন। তাতে দেখা যায় এক শিক্ষক মেয়েটির কাছে ক্ষমা চান তার আগের আপত্তিকর আচরণের জন্য।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষক কর্তৃক প্রাক্তন ছাত্রীকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির খবর সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় অত্র প্রতিষ্ঠানের দুইজন প্রভাষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক বলেন, তিনি পদাধিকার বলে কলেজটির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি। তাই নিজ ক্ষমতাবলে সাময়িক বরখাস্তের এখতিয়ার রয়েছে। পরে স্থায়ী বরখাস্ত করতে হলে শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমোদন লাগবে।   

কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফেইসবুকে এই ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এলে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ওই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাসুম আলী বেগ। অন্য দুই সদস্য হলেন বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুর রহমান ও উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাফিজুর রহমান।

দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।

অধ্যক্ষ মুস্তাফিজুর রহমান আরও জানান, প্রভাষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে সাবেক এক ছাত্রী লিখিতভাবে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্রীর পরিবার সমঝোতা করেছে।

“তদন্তে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

সমঝোতা হলে ক্ষমা করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এবার সেই সুযোগ নেই।”

বিয়াম ফাউন্ডেশন বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক (উপসচিব) আব্দুর রফিক বলেন, এমন অনৈতিক ঘটনায় যে-ই জড়িত হোক না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে; কোনো ছাড় হবে না। স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিয়াম ফাউন্ডেশনের কড়া বার্তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

অভিযোগ প্রসঙ্গে বরখাস্ত প্রভাষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, “একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। ছাত্রীর পরিবারের সাথে সমঝোতা হয়েছে।”

অপর বরখাস্ত আবদুল মোত্তালিব বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে তার ফেইসবুক আইডি ‘বারবার হ্যাকড’ হচ্ছে বলে তিনি জানান।

এদিকে, যৌন হয়রানির বিচার চেয়ে শনিবার দুপুরে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা  অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।

তাদের একজন রাকিবুল হাসান রক্তিম সাংবাদিকদের বলেন, তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর করা স্মারকলিপিতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রকাশ, দোষীদের স্হায়ী বরখাস্ত, দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।