কুড়িগ্রামে তিস্তার তোড়ে বুড়িরহাট স্পারে ভাঙন

তিস্তার ভাঙন থেকে রক্ষায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় নির্মিত বুড়িরহাট স্পারের মাটির তৈরি একটা অংশ নদীর প্রবল স্রোতে বিলীন হয়ে গেছে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2020, 12:22 PM
Updated : 21 July 2020, 12:37 PM

সোমবার রাতে এই স্পারের ৫০ মিটারের মতো নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পর স্থানীয়দের অনেকেই ঝুঁকি এড়াতে বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে।

এদিকে, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রধান নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও ধরলা ও ব্রক্ষপুত্র নদের পানি এখনও বিপদসীমার উপর বইছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ১৯৯৮ সালে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তার ভাঙন থেকে জনপদ রক্ষায় ৩৫০ মিটার দীর্ঘ স্পারটি নির্মাণ করা হয়। এর ১৫০ মিটার কক্রিটের তৈরি; বাকিটা মাটি ও ব্লকের তৈরি।

স্থানীয়রা জানান, গত তিন দিন ধরে তিস্তার মূল স্রোতধারাটি সরাসরি আঘাত করছিল এই স্পারকে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে শত শত শ্রমিক পালা করে দিন-রাত স্পারটি রক্ষার চেষ্টা করেছে। কিন্তু মাটির তৈরি অংশের ৫০ মিটার তিস্তার প্রবল স্রোতে ভেঙে যায়।

রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবীন্দ্র নাথ রায় বলেন, স্পারটি ভেঙে যাওয়ার ফলে উজান ও ভাটিতে ৫-৬টি গ্রামের মানুষ ভাঙন আতংকে রয়েছে। পাশাপাশি বুড়িরহাট ও কালিরহাট বাজারসহ ঝুঁকিতে পড়েছে গাবুরহেলাল গ্রামের স্পারটিও। 

মঙ্গলবার সরেজমিন ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের বুড়িরহাটে গিয়ে দেখা যায়, শত শত মানুষ ভেঙে যাওয়া স্পারটি দেখার জন্য ভিড় করছে। পাশেই ঘর-বাড়ির অবশিষ্ট অংশ সরিয়ে নিচ্ছে একটি পরিবারের নারী, পুরুষ ও শিশুরা।

এদের একজন শরিফা বেগম বলেন, হঠাৎ করেই স্পারটি ভাঙনের কবলে পড়ায় তাদের বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। রাস্তার পাশে মালামাল রেখে কোনোমতে দিনযাপন করছেন।

একই অবস্থা সালাম, মজিদুল, তৈয়ব, মঞ্জু মিয়াসহ কয়েকজনের। সবাই তিস্তার আগ্রাসনে ভিটেহারা।

ঘড়িয়ালডাঙা গ্রামের ইয়াসিন আলী বলেন, এই স্পারটি বেশ কয়েকটি গ্রামকে রক্ষা করেছিল। কিন্তু এখন সবাই ঝুঁকিতে পড়েছেন। দ্রুত স্পারটি মেরামত না করলে শত শত পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রবল ঘূর্ণিস্রোতের কারণে স্পারের অংশবিশেষ বিলীন হয়েছে। পানি কমলে পাইলিং করে এবং জিও ব্যাগ ফেলে স্পারটি মেরামত করা হবে।

কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্পার ও বাঁধগুলো রক্ষায় আগে থেকেই প্রস্ততি নেওয়া হলেও বন্যার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কয়েকটি স্থানে স্পার ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগ করে দ্রুত এসব ভাঙা অংশ মেরামত করে জনগণের ভোগান্তি কমানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।