চাঁদপুরে প্রকৌশলীকে পেটানোর অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশিরের বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের এক প্রকৌশলীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2020, 04:39 PM
Updated : 20 July 2020, 04:39 PM

রোববার দুপুরে কচুয়া শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের কাজ পরিদর্শনকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনে এই ঘটনা ঘটে।  

এই ঘটনায় জেলা শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নূরে আলম ওইদিনই কচুয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশিরকে প্রধান আসামি করে তিন জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

প্রকৌশলী নূরে আলমের অভিযোগ, রোববার কচুয়া শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের কাজের জন্য কিছু পাথর আসে। ওই পাথরগুলোর বিষয়ে তাদের কাছে অভিযোগ আসে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি সেখানে যান।

ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে তিনি ইউএনও কার্যালয়ে যান এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান বলে জানান নূরে আলম।

“সেখানে গিয়ে পাথরগুলো যাচাই করছি, এমন সময় হঠাৎ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির কোনো কথা না বলেই অতর্কিত হামলা চালান। তিনি এবং তার লোকজন আমাকে মারধর করেন। তখন চেয়ারম্যান বলেন, দড়ি আন, তাকে বেঁধে রাখব।”

এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান তাকে বাঁশ দিয়ে মারধর করেন বলেও নূরে আলম অভিযোগ করেন।

“তখন আমি আতংকিত হয়ে কচুয়া উপজেলা হাসপাতালে না গিয়ে চাঁদপুরে এসে সরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেই।”

বিষয়টি তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলেও জানান।

প্রকৌশলী নূরে আলম জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছয় কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয় তলা ভিত বিশিষ্ট কচুয়া শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনন্ত ট্রেডার্স (জেবি) এই কাজ করছে।

চাঁদপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ফাহিম ইকবাল বলেন, “উপ-সহকারী প্রকৌশলী নূরে আলম ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিকভাবে ইউএনওর কাছ থেকেও জানি, এবং ঘটনার সত্যতা পাই। পরে বিষয়টি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের নির্দেশ মতো আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপায়ন দাস শুভ বলেন, “ঘটনাটি আমার সামনেই ঘটেছে। তবে ওই প্রকৌশলীকে যেভাবে মেরেছে, তাতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো অবস্থা হয়নি।”

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাজাহান শিশির বলেন, “কাজের মান নিম্ন হওয়ায় আমি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিতে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফিরে আসার সময় কিছু ছেলে প্রকৌশলীর উপর হামলা করে। আমি তখন তাদের গিয়ে থামাই। পরিস্থিতি কিছুটা ঘোলাটে হওয়ায় আমি স্থানীয় ছেলেদের সরিয়ে দিতে গিয়ে উভয় পক্ষকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেই। এতে যদি কোনো অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।”

কচুয়া থানার ওসি ওয়ালী উল্যাহ বলেন, “এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”