বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা ঠেকাল ভারতীয় পণ্য আমদানি

বেনাপোল দিয়ে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্য নেওয়া বন্ধ রাখায় এবার দেশের রপ্তানিকারকরা ভারতীয় পণ্য আসাও বন্ধ করে দিয়েছেন।

বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2020, 11:39 AM
Updated : 2 July 2020, 11:39 AM

বৃহস্পতিবার ভারত থেকে পণ্যবাহী কোনো ট্রাক বাংলাদেশে আসেনি বলে বেনাপোল শুল্ক ভবনের কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শামিমুর রহমান জানান।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় গত ২২ মার্চ বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে দুই দেশের বন্দর, কাস্টমস, বন্দর ব্যবহারকারীরা দফায় দফায় বৈঠকের পর গত ৮ জুন সীমান্ত বাণিজ্য সচল হয়। এরপর থেকে ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে আসছে, কিন্ত বাংলাদেশি কোনো পণ্য ভারত গ্রহণ করছে না করোনাভাইরাস সংক্রমণ শঙ্কায়।

রপ্তানিকারকদের এই উদ্যোগে বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন সমর্থন দিয়েছে বলে জানান বেনাপোল সিএন্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান।

বেনাপোল শুল্কভবনের কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শামিমুর রহমান বলেন, ভারত রপ্তানি পণ্য গ্রহণ না করায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে মঙ্গলবার এন্ট্রি করা ১০৬ ট্রাক পণ্য বুধবার ঢোকার পর আর কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে ঢোকেনি। বৃহস্পতিবার কোনো পণ্যবাহী ট্রাক দুই বন্দরের মধ্যে আসা যাওয়া করেনি। 

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, ভারত পণ্য পাঠালেও তারা বাংলাদেশ থেকে কোনো পণ্য নিচ্ছে না। এজন্য বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। রপ্তানিকারকদের অর্ডার বাতিল হয়ে যাচ্ছে। এসব কারণে রপ্তানিকারকরা ভারতের সংশ্লিষ্টদের বার বার বলার পরও কোনো ফল হয়নি।

“তাই বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা ভারতের পণ্য ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আমদানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।”

বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় ২২ মার্চ থেকে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। গত ৮ জুন থেকে পুনরায় আমদানি শুরু হয়েছে; কিন্তু বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে না।

“এই বন্দর দিয়ে রপ্তানি চালু না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এজন্য গত ২৪ জুন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে বাংরাদেশি পণ্য নেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। কিন্ত এখনও তেমন কোনো উদ্যোগ দেখিনি।”

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার বলেন, বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্য ভারত গ্রহণ না করায় বাংলাদেশি বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন ভারতীয় পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। বেনাপোল বন্দর এলাকায় অন্তত ৫শ রপ্তানি পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকে আছে ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায়।

রপ্তানি বাণিজ্য সচলের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই আমদানি-রপ্তানি শুরু হবে।”