শ্রীমঙ্গলের বাগানে শিশুকে গলা কেটে হত্যা, প্রহরী গ্রেপ্তার

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একটি চা বাগানে পাঁচ বছরের এক শিশুকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে ওই বাগানের নিরাপত্তা প্রহরীতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2020, 02:38 PM
Updated : 1 July 2020, 02:38 PM

গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তি বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জান জানান।

এ ঘটনায় উত্তেজিত শ্রমিকরা বুধবার ওই প্রহরীর ঘরে অগ্নিসেংযোগ করেছে।

নিহত লিমন গড় (৫) বিলাসছড়া চা বাগান এলাকার অটোরিকশা চালক শিশু গড়ের ছেলে। লিমনের মা ওই চা বাগানে শ্রমিকের কাজ করেন।

ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিলাসছড়া পরীক্ষণ খামার কার্যালয় ঘেরাও করে

গ্রেপ্তার ইউনুছ উল্লা (৩০) একই বাগানের নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করেন।   

শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আব্দুস ছালেক জানান, মঙ্গলবার দুপুরে পাশের বাড়ি থেকে দুধ আনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। রাতে বাগানের ৪ নম্বর সেকশনের একটি জঙ্গলে তার গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়।

ওসি জানান, খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে লাশ উদ্ধার করা হয় এবং রাতেই অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় ইউনুছকে আটক করা হয়েছে।

“রাতে জিজ্ঞাসাবাদে ইউনুছ ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন এবং তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে।”

মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ জানান, দুপুরে আদালতে হাজির করার পর হত্যার দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।  

পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ বলেন, বিলাসছড়া চা বাগানে একটি অটোরিকশার ব্যাটারি চুরিকে কেন্দ্র করে বাগানের চকিদার ইউনুছ উল্লার সঙ্গে একই বাগানের বাসিন্দা শিবু গড়ের দ্বন্দ্ব হয়।

নিহত রিমনের স্বজনের আহাজারি

“এর জের ধরে ইউনুছ মঙ্গলবার দুপুরে শিবু গড়ের ছেলে লিমনকে পাখি ধরে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাগানের নির্জন এলাকায় নিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছেন।”

রিমনের বাবা শিবু গড় বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে তার রিমন পাশের বাড়ি থেকে দুধ আনতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাতে চা-বাগানের ৪ নম্বর সেকশনের একটি জঙ্গল থেকে তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

“রিমন আমার একমাত্র ছেলে। রিমনের মা বাগানে শ্রমিকের কাজ করেন। আর আমি নিজের সিএনজি চালিয়ে সংসার চালাই। এই সিএনজির নামও দিয়েছিলাম ছেলে রিমনের নামে। এই সিএনজির ব্যাটারি চুরি করেছে ইউনুছ।”

শিবু গড় বলেন, ইউনুস কয়েক মাস আগে তার (শিবু গড়) আটোরিকশার ব্যাটারি চুরি করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজন শালিস বৈঠকে ইউনুসকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্ত ইউনুস টাকা দিতে অস্বীকার করেন।

হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তর ইউনুছ উল্লা

“টাকা না দিলে আমি থানায় মামলা করব বলে ভয় দেখিযেছি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।”

এদিকে, বুধবার সকালে বিলাস ছড়া চাবাগানের উত্তেজিত শ্রমিক বস্তির কয়েকটি বাড়ি ভাংচুর করে এবং ইউনুছের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে।

পরে শ্রমিকরা বিচারের দাবিতে বিলাসছড়া পরীক্ষণ খামার কার্যালয় ঘেরাও করেছে বলে জানান বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি হিরণ বুনার্জী।