টাঙ্গাইলে যমুনার ভাঙনে বিলীন ‘দুইশ’ স্থাপনা

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় দুই সপ্তাহে যমুনা নদীর ভাঙনে ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাজারসহ অন্তত ‘দুইশ’ স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিএম এ রাজ্জাক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2020, 12:44 PM
Updated : 24 June 2020, 12:44 PM

সলিমাবাদের পাইকশা মাইঝাইল এলাকায় গত ১১ জুন থেকে যমুনার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

ভাঙন শুরুর প্রথমদিনেই যমুনাগর্ভে বিলীন হয়েছে নবনির্মিত দোতলা পাইকশা মাইঝাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভেঙে যাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ভাঙন রোধে এখনও পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড বা স্থানীয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় দেড় শতাধিক বাড়ির মানুষের অভিযোগ।

দ্রুত উদ্যোগ না নিলে নাগরপুর উপজেলার বিরাট এলাকা যমুনা নদীর গ্রাসে বিলীন হয়ে যাবে বলে এলাকাবাসীর শঙ্কা।

পাইকশা মাইঝাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আতিকুর রহমান বলেন, গত বছর ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার শাহজানী, আটাপাড়া, মারমা, সলিমাবাদ, পাইকশা, দপ্তিয়রসহ কয়েকটি গ্রামে যমুনা নদীর প্রবল ভাঙন দেখা দেয়। ফলে ওইসব এলাকার ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ  ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

“সে সময় যদি ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতো তাহলে আজ আমাদের বিদ্যালয়টি যমুনায় বিলীন হয়ে যেত না।”

খাসঘুনীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নাগরপুর সরকারি কলেজের সাবেক ছাত্র শফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকেদিনের প্রবল ভাঙনে এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ দুই শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

গত ১৪ জুন নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।

“আশা করছি খুব দ্রুতই ভাঙন রোধে তারা পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।”

যারা ভাঙনে গৃহহীন হয়েছে তাদের পার্শ্ববর্তী আশ্রয় শিবিরে থাকার পরামর্শ দিয়ে ইউএনও বলেন, “যেহেতু করোনার প্রভাবে স্কুল বন্ধ তাই ভেঙে যাওয়া বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য অস্থায়ী বিদ্যালয় নির্মাণ করা হবে।”

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা আমি ও আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছি। লম্বা দৈর্ঘ্যরে এই ভাঙন আপৎকালীন কাজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই মুহূর্তে রক্ষা করা সম্ভব না। তাই স্থায়ী কাজের মাধ্যমে এই ভাঙন ঠেকাতে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা আছে। প্রকল্প পাশ হলেই কাজ শুরু করা হবে।