বরিশালে জুতার মালা: ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৩

উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় এক মাদ্রাসা কর্মচারীকে সালিশ বৈঠকে শাস্তি হিসেবে জুতার মালা পরানোর ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

কাওছার হোসেন বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2020, 05:27 PM
Updated : 4 June 2020, 05:29 PM

বৃহস্পতিবার পৃথক স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী, সাবেক মেম্বার সত্তার সিকদার ও স্থানীয় বজলু আকন।

এর আগে দুপুরে নয় জনকে আসামি করে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন শাস্তির শিকার উপজেলার দড়িচর খাজুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম আলাউদ্দিন।

বরিশাল জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাইমুল হক জানান, মাদ্রাসার অফিস সহকারী শহিদুল ইসলামের গলায় জুতার মালা পরানোর একটি ভিডিও গত বুধবার রাতে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি নজরে আসার পরপরই ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে পুলিশ।

“বৃহস্পতিবার বিকালে মুলাদী উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী ও সাবেক মেম্বার সত্তার সিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে দরিচর খাজুরিয়া থেকে গ্রেপ্তার হয় বজলু আকন নামে একজন।”

শহিদুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা তাদের মোবাইল নম্বরে আসে। ২০১৯ সালে উপবৃত্তির তালিকা পাঠানোর সময় এক ছাত্রী মাদ্রাসায় না আসায় নিজের একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে দেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ দিন ব্যবহার না করায় নম্বরটি বন্ধ হয়ে যায়। এরই মধ্যে ওই ছাত্রীর এক বছরের উপবৃত্তির ১৮শ’ টাকা বন্ধ মোবাইল নম্বরে জমা হয়। কিছুদিন আগে বন্ধ নম্বরটি সচল করে উপবৃত্তির টাকা দেখতে পান তিনি। ওই টাকা ছাত্রীর পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই গেল ৩০ মে তাকে মারধর করে সিম কার্ডটি নিয়ে যায় ছাত্রীর খালু সাবেক ইউপি মেম্বার সত্তার সিকদার। এ সময় তার ছেলেকেও মারধর করা হয়।

তিনি বলেন, বুধবার দুপুরে তাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন তার উপর নির্যাতন চালায় এবং তারা তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়।

গ্রেপ্তার হওয়ার আগে দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী জানিয়েছিলেন, “আলাউদ্দিন হুজুর উপ বৃত্তির চার হাজার ৮শ’ টাকা আত্মসাত করেছে। এ বিষয়ে সালিশ বৈঠকে তাকে টাকা ফেরত দিতে বলা হয়। না দিতে পারলে জুতার মালা পরানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় স্বেচ্ছায় জুতার মালা পরতে রাজি হন আলাউদ্দিন।”