বরিশালের ইউনিয়ন পরিষদে সালিশে শাস্তি জুতার মালা

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার দড়িচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে সালিশে এক মাদ্রাসা কর্মচারীর গলায় জুতার মালা পরানোর শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2020, 05:32 AM
Updated : 4 June 2020, 05:43 AM

দড়িচর খাজুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম আলাউদ্দিনকে মাদ্রাসার এক ছাত্রীর উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এই শাস্তি দেওয়া হয় বলে চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী জানিয়েছেন।

এছাড়া ওই কর্মচারীকে মারধর করারও অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে।

গলায় জুতার মালা পরানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বুধবার রাতে প্রচার হলে বিষয়টি বিভিন্ন মহলের নজরে আসে।

ভিডিওতে দেখা যায়, আলাউদ্দিনের গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে গালমন্দ করছেন চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী। পরে আলাউদ্দিনের মাথা থেকে টুপি খুলে নেন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য সত্তার সিকদার।

আলাউদ্দিন বলেন, উপবৃত্তির টাকা শিক্ষার্থীদের মোবাইল নম্বরে আসে। ২০১৯ সালে উপবৃত্তির তালিকা পাঠানোর সময় এক ছাত্রী মাদ্রাসায় না আসায় সেখানে তিনি নিজের একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন নম্বরটি ব্যবহার না করায় এটি বন্ধ হয়ে যায়।

এরই মধ্যে ওই ছাত্রীর এক বছরের উপবৃত্তির ১৮০০ টাকা ওই মোবাইল নম্বরে জমা হয়ে যায়। কিছুদিন আগে তিনি নম্বরটি সচল করে উপবৃত্তির টাকা দেখতে পান।

“এরই মধ্যে ৩০ মে আমাকে মারধর করে সিম কার্ডটি নিয়ে যান ছাত্রীর খালু সাবেক ইউপি সদস্য সত্তার সিকদার। এ সময় আমার ছেলেকেও মারধর করা হয়। এরপর বুধবার দুপুরে আমাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন আমার ওপর নির্যাতন চালান। সবশেষ আমার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়।”

চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী জুতার মালা পরানোর কথা স্বীকার করলেও নির্যাতনের কথা স্বীকার করনেনি।

চেয়ারম্যান বলেন, “সম্প্রতি উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের বিষয়ে সালিশ বৈঠক হয় ইউনিয়ন পরিষদে। এ সময় সদস্য শফি দেওয়ান, ফিরোজসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি হিসেবে বজলু আকন, আবুল বয়াতি, কামরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

“বৈঠকে তাকে উপবৃত্তির টাকা ফেরত দিতে বলা হয়। না দিতে পারলে তাকে জুতার মালা পরানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় স্বেচ্ছায় জুতার মালা পরতে রাজি হন আলাউদ্দিন। তাকে মারধর করা হয়নি।”

এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিষয়টি পুলিশের নজরে এসেছে বলে জানিয়েছেন মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি আবিদুর রহমান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, পুলিশ খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।