নীলফামারীতে ঝড়ে বটগাছ চাপায় নিহত ১

নীলফামারীতে ঝড়ে গাছ চাপা পড়ে একজন মারা গেছে।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2020, 02:49 PM
Updated : 25 May 2020, 03:02 PM

জেলার ডোমার, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় বিচ্ছিন্নভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শতাধিক ঘরবাড়ি ও গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বয়ে যাওয়া ঝড়ে। সোমবার ভোরে পৃথক ঝড়ে সৈয়দপুর উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়।

ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের মিরজাগঞ্জ বাজারের শতবর্ষী এক বটগাছ উপড়ে পড়ায় তার নিচে চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রয়াত মোসলেম উদ্দিন (৭০) পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি জোড়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাচানের ছোট ভাই।

জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন,“ ঝড়ে গাছ চাপা পড়ে জোড়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যানের ছোটভাই মোসলেম উদ্দিন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি।

“আজ (সোমবার) দুপুরে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। তালিকা পাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।”

জেলার ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ি ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে আধা মিনিটের ঝড়ে মিরজাগঞ্জ ও জোড়াবাড়ি গ্রামে কাচা ঘরবাড়িসহ গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়।

“এ সময় শতবর্ষী একটি বটগাছ উপড়ে মিরজাগঞ্জ বাজারের এক কাপড়ের দোকানে পড়ে। এতে ওই গাছের চাপায় ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিন ঘটনাস্থলে নিহত হন। তিনি জোড়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাচানের ছোট ভাই।”

এলাকাবাসী আহত পাঁচ জনকে উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা প্রদান করেন বলেও জানান তিনি।

ঝড়ে ভাইকে হারানো জোড়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাচান বলেন,“ঝড়ে ইউনিয়নের মিরজাগঞ্জ ও জোড়াবাড়ি গ্রামের অর্ধ শতাধিক কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা।

“ঝড়ে উড়ে গেছে জোড়াবাড়ি সিদ্দিকিয়া দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসা ও মিরজাগঞ্জ কলেজের আধাপাকা ঘরের টিনের চালা। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ভূট্টাক্ষেতে ও উঠতি বোরো ধানের।”

সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দুইটি গ্রামে দেখা গেছে, অনেক গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে ভেঙে পড়েছে কাচা ঘরবাড়ি।

শতবর্ষী বটগাছটি উপড়ে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিরজাগঞ্জ বাজারের ১০টি দোকান। বটগাছটি পড়ে থাকতে দেখা গেছে মিরজাগঞ্জ-চিলাহাটি রেল লাইনের উপরে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এ পথে রেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে খুলনাগামী একটি পণ্যবাহী ট্রেন চলে বতর্মানে।

এলাকাবাসী জানান, দ্রুত গাছটি অপসারণ করা না হলে পণ্যবাহী ট্রেনটি চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে।

মিরজাগঞ্জ  কলেজ ও জোড়াবাড়ি সিদ্দিকিয়া দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসার আধাপাকা ঘরের উড়ে গেছে টিনের ছাউনি। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তারে গাছপালা ভেঙে পড়ায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সঞ্চালন।

এ মাদ্রাসার সভাপতি ময়নুল হক জানান, মাত্র আধা মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড করে দেয় ওই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ওই দুই গ্রামের অর্ধ শতাধিক ঘরবাড়ি।

এদিকে, একই সময়ে জেলার জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল, শৌলমারী, কৈমারী, ডাউয়াবাড়ি, গোলমুন্ডা এবং কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি, পুটিমারী, গাড়াগ্রাম ও কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বিক্ষিপ্তভাবে ঝড় বয়ে যায়। এসব স্থানে অর্ধ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্তসহ অসংখ্য গাছপাপালা ভেঙে ও উপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।

অপর দিকে, সোমবার ভোরে জেলার সৈয়দপুর উপজেলার ওপর দিয়ে বিক্ষিপ্তভাবে ঝড় বয়ে যায়। এ উেপজেলার বিভিন্ন গ্রামে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বতস্ত ও অসংখ্য গাছপালা উৎপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।