মঙ্গলবার আমাদের জেলা প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন তাদের জেলার পরিস্থিতি।
চাঁদপুর-ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে লঞ্চ বন্ধ
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে চাঁদপুর-ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের মধ্যে চলাচলকারী সব ধরনের যাত্রীবাহী লঞ্চ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই সাথে বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশের মত চাঁদপুরে ট্রেন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক এবং বড়স্টেশন রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. জাফর এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুপুর বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমাদের বিআইডব্লিওটিএ সাথে দুপুরে কথা হয়েছে। তাদের নির্দেশে আমরা সব ধরনের যাত্রীবাহী লঞ্চ বন্ধ করে দিয়েছি।
“পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।”
তবে সকাল থেকে চাঁদপুর ঘাট থেকে সব ধরনের নির্ধারিত লঞ্চগুলো ছেড়ে গিয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জাফর জানান, ট্রেন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আসার পর থেকে চাঁদপুর থেকে সিডিউল অনুযায়ী কোন ট্রেন ছেড়ে যায়নি। চাঁদপুরের সাগরিকা এক্সপ্রেস ও ডেমু ট্রেন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
তবে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস আগের নিয়মেই ছেড়ে যাবে বলে তিনি জানান।
চাঁদপুর লঞ্চঘাটে বরিশালগামী যাত্রী মোহাম্মদ বাবুল বলেন, “সরকার হুট করে এভাবে লঞ্চ বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি। সকাল থেকে লঞ্চ ঘাটে এসে লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছি কিন্তু কোনো লঞ্চ আসেনি। আগে থেকে লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলে আজকে আমাদের এই দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।”
ঢাকা চাঁদপুরগামী লঞ্চ এমভি সোনার তরী-এর সুপারভাইজার শওকত বেপারী বলেন, লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা আসার পর আমরা চাঁদপুর থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছি।
“সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে চলা আমাদের দায়িত্ব, তাই ১২টার পর থেকে কোনো লঞ্চ চাঁদপুর থেকে ছেড়ে যায়নি।”
এদিকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকেই রেল স্টেশনের সব হোটেল ও দোকানপাটসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে রাখা হচ্ছে। সোমবার রাতে চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
দিনাজপুরে ট্রেন বন্ধ, তবে বাস চলছে
করোনাভাইরাস রোধে সতর্কতা হিসাবে লোকজনকে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বাইরে বের না হওয়ার জন্য বারবার বলা হলেও দিনাজপুরে এখনও কেউ তা মানছে না।
শহরের রাস্তার পাশে কিছুর চায়ের দোকান পুলিশ বন্ধ করলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নেই।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সব ধরনের লোকাল এবং মেইল ট্রেইন বন্ধ করছে। অন্যদিকে দিনাজপুরে যাত্রীবাহী বাস চলাচল মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে।
ট্রেন বন্ধের পর স্টেশন এলাকা জনশূন্য হলেও শহরের চিত্র পুরো ভিন্ন। হাট-বাজার ও মার্কেট এলাকায় এক সাথে হাজারো মানুষের অবাধ চলাচল অব্যাহত রয়েছে।
নওগাঁয় সব গণপরিবহন বন্ধ
নওগাঁয় নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ প্রতিরোধে জেলায় দুর্যোগ প্রতিরোধ ও সমন্বয় কমিটি মঙ্গলবার বিকাল থেকে জেলায় সব গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে।
জেলায় বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, মিনিবাস, রিকশা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের গণপরিবহন পরবর্তী নিদের্শ না দেওয়া পর্যন্ত চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন নওগাঁ পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান।
এ ছাড়া বিকাল থেকে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী।
নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ জানান, সেনাবাহিনী টহলের পাশাপাশি এখন পর্যন্ত যে সব প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইনে যাননি তাদের খুঁজে বের করাসহ সব কাজে সহাযোগিতা করবে।
জেলার বিভিন্ন জায়গায় জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলায় একুশে পরিষদ, আব্দুল জলিল ফাউন্ডেশন, সুখি জীবন ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন দল, সামাজিক সংগঠন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক লিফলেট, মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করা হচ্ছে।
এছাড়া মঙ্গলবার সকালে শহরের মুক্দির মোড়ে গণপরিবহনে স্প্রে করা হয়।