অবরুদ্ধ শিবচরে কয়েকটি দোকান খোলা

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় থমথমে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

রিপনচন্দ্র মল্লিক মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2020, 04:19 PM
Updated : 21 March 2020, 04:20 PM

অল্পসংখ্যক নিত্যপণ্যের দোকানপাট ছাড়া প্রায় সবকিছুই বন্ধ রয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বের হচ্ছে না। কার্যত পুরো শিবচর উপজেলা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

উপজেলার শিবচর পৌর শহর, দক্ষিণ বহেরাতলা, উত্তর বহেরাতলা, বাঁশকান্দি ও পাঁচ্চর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বৃহস্পতিবার থেকে প্রশাসনের কনটেইনমেন্ট (নিয়ন্ত্রিত এলাকা) ঘোষণার পর থেকে উপজেলার অধিকাংশ মানুষ ঘর থেকে বের হয় না।

শিবচর পৌরসভার গুয়াতলার বাসিন্দা কামাল উদ্দিন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

জানালা খুলে ভেতর থেকে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বলেন।

“বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে আমরা বিশেষ প্রয়োজন (শৌচকার্য) ছাড়া ঘরের বের হই না। আমি আমার স্ত্রী ও সন্তান মিলে পরিবারের পাঁচ সদস্য নিয়ে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে বের হই না।”

দুপুরে কথা হয় শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালিমন্দির এলাকার বাসিন্দা হোমিও চিকিৎসক কে এম গোলাম মোস্তফার সঙ্গে।

তিনি বলেন, প্রশাসন থেকে কিছুক্ষণ পরপরই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মাইকিং করা হয়, যাতে কেউ ঘর থেকে বাইরে বের না হয়। তাই আমি, আমার স্ত্রী ও এক মেয়ে গতকাল বিকাল থেকেই বাসা থেকে বের হই না। যেহেতু করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ধারণ করেছে, তাই প্রশাসনের নির্দেশ মেনে ঘর থেকে আমরা বের হচ্ছি না।”

শিবচর বাজারের সেলুনের মালিক সুবল চন্দ্র দাস বলেন, “দুই দিন ধরে আমি দোকান বন্ধ রেখেছি। আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। গত দুই দিন ধরে বাসা থেকে বের হই না। তবে এখন বের হয়েছি বাজার থেকে কিছু ডিম কিনে নেওয়ার জন্য। যেহেতু দোকান বন্ধ তাই আর কখন ঘর থেকে বের হব জানি না।”

শিবচর পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন খান বলেন, “প্রশাসনের নির্দেশে আমরা পৌর শহরের সকল দোকানপাট বন্ধ করার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছি। যতদিন পর্যন্ত আমার পৌর এলাকাসহ অন্যান্য এলাকা করোনাভাইরাস মুক্ত না হবে, ততদিনই প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলব।”

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন টিম পরিদর্শন করছে। কাঁচাবাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি।”

জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য করোনাভাইরাস আক্রান্ত এলাকাগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে এবং উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশের টহল টিম মোতায়েন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।