শিবচরের চার এলাকা ঘিরে বিশেষ ব্যবস্থা

নভেল করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত ইতালিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরা প্রবাসীদের একটি বড় সংখ্যা মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চারটি এলাকার হওয়ায় ওই এলাকাগুলো নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।

রিপনচন্দ্র মল্লিক মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2020, 02:06 PM
Updated : 20 March 2020, 02:08 PM

কর্মকর্তারা বলছেন, শনিবার থেকে এসব এলাকায় পুলিশ পাহারা বসছে। আগামী ১৫ দিন বাসিন্দাদের সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। হটলাইনের মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া হবে।

এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বৃহস্পতিবার বিকালে পুরো শিবচর উপজেলায় ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান ছাড়া সব ধরনের দোকান, গণপরিবহন, বিয়ে, মাহফিল, রাজনৈতিক সমাবেশসহ সব ধরনের গণজমায়েত ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে শিবচর উপজেলা প্রায় অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।

শুক্রবার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। নসিমন-করিমনসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকায় মানুষের চলাফেরাও কমে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, চলাফেরায় বিধি-নিষেধের ফলে রাস্তাঘাট ফাঁকা রয়েছে। কাউকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না।

এখন উপজেলার ওই চার এলাকা বাদে অন্য সব জায়গা থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন। তবে এলাকাগুলোর নাম প্রকাশ করেননি তিনি।

জেলা প্রশাসক বলেছেন, শিবচর পৌরসভার দুটি ওয়ার্ড, দক্ষিণ বহেরাতলা ইউনিয়নের একটি গ্রাম এবং পাচ্চর ইউনিয়নের গ্রামকে অবরোধের আওতায় রাখা হচ্ছে।

“শনিবার ওই চারটি এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এলাকাগুলো অবরুদ্ধ থাকবে। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রবাসী কেউ বাইরে যেতে পারবেন না। বাইরে থেকে কেউ এসব এলাকায় ঢুকতেও পারবেন না। তাদের কোনো কিছু দরকার হলে প্রশাসন সহযোগিতা করবে।”

ওই এলাকাগুলো ঘনবসতিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন শিবচর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আতাহার বেপারী।

তিনি বলেন, “ইতালিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ৬৬৫ জন প্রবাসী শিবচরে এসেছেন। তাদের অধিকাংশেরই বাড়ি ওই চার এলাকায়।”

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আবির হোসেন বলেন, “আগামী ১৫ দিন ওই এলাকার সবাই ঘরে থাকবেন। হটলাইনের মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। তারা পুলিশের সঙ্গে, প্রশাসনের সঙ্গে বা সিভিল সার্জনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। মোবাইল নম্বরগুলো বারবার মাইকিংয়ের মাধ্যমে তাদের পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করব।

“আর যদি জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দরকার হয়, সেক্ষেত্রে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তারা বাজারে যেতে পারবেন।”

জেলার সিভিল সার্জন শফিকুল ইসলাম জানান, মাদারীপুরে এখন পর্যন্ত ৪৭৭ জনকে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২১৪ জন সুস্থ আছেন। এখন ২৬৩ জন ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ আছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় মাদারীপুরে নতুন করে ৪৯ জনকে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের অধিকাংশই শিবচরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া সদর হাসপাতালের নতুন ভবনে বিশেষভাবে তৈরি করা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে তিনজন ও আইসোলেশনে চারজনকে রাখা হয়েছে।