২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নিহত হন সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজে স্নাতক (সম্মান) ইংরেজির ১ম বর্ষের ছাত্রী রোদেলা।
২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মহল্লার নতুন বাজার মহল্লার মমিনুর রহমান সেন্টুর ছেলে প্রবাসী সোহানুর রহমান সোহানের সঙ্গে রোদেলার বিয়ে হয়।
যৌতুকের কারণে শ্বশুরবাড়ির লোকজন রোদেলাকে হত্যা করে বলে মামরায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, বিয়ের পর ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য রোদেলাকে চাপ দিতে থাকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এজন্য তাকে নানাভাবে মানসিক যন্ত্রণাও করা হতো।
এক পর্যায়ে ২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে স্বামী, শ্বাশুড়ি ও ননদ মিলে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে রোদেলাকে হত্যা করে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে বর্তমানে এ মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই গাফফার বলেন, রোদেলার মৃতদেহের ভিসেরা রিপোর্টে শ্বাসরোধ করে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। ব্যাপক তদন্ত শেষে স্বামী সোহানসহ আট জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন রোদেলার ননদ সুমি বেগম (৪০), শ্বাশুড়ি আনোয়ারা বেগম (৫৫), ভাসুর মো. সুমন (৩৬), ভাসুরের স্ত্রী রেখা বেগম (২৫), শ্বশুর মোমিনুর রহমান সেন্টু (৬৫), ননদের স্বামী মো. হাফিজ (৪৫), ও সোহানের মামাত ভাই সাজিদ (৪২)।
এ মামলায় ১৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এপিপি স্বপন কুমার পাল বলেন, প্রধান আসামি রোদেলার স্বামী ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তাকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। এরপর মামলার বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত শুরু হবে।
রাদেলার বাবা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোদেলাকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টাও করা হয়।”
প্রভাবশালী আসামিরা মামলাটিকে দীর্ঘায়িত করতে নানাভাবে অপচেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এ মামলার দ্রুত বিচার শুরুর দাবির সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রধান আসামি সোহানকে গ্রেপ্তারেরও দাবি জানান।
ফরিদপুরের কোতোয়ালী থানার এসআই বেলাল হোসেন বলেন, “মামলার প্রধান আসামি সোহানুর রহমান সোহানকে গ্রেপ্তারে পুলিশ জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”