বুধবার ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আওয়ামী লীঘ শুধু মুখেই গণতন্ত্রের কথা বলে। আসলে তারা গণতন্ত্রের চর্চাই করে না। দেশের সমস্যা নিয়ে কথা বললে রাষ্ট্রদ্রোহী বলা হয়।
“খুনের আসামিদের জামিন দেওয়া হয়, অথচ খালেদা জিয়ার জামিন তারা দেয় না। খালেদা জিয়া বের হলে তিনি আওয়ামী লীগের অন্যায়ের কথাগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরবেন; এজন্য তাকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “জাতির আজ চরম দুঃসময় চলছে। এতবড় দুঃসময় ১৯৭১ সালেও ছিল না। একাত্তরে জাতি যুদ্ধ করেছে বহিঃশত্রুর বিরুদ্ধে। কিন্তু আজকের শত্রু হচ্ছে ঘরের শত্রু। ঘরের মধ্যে থেকেই তারা বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করছে।”
জাতিকে সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে; মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের আগের রাতে ৩/৪টি রাষ্ট্রযন্ত্রের বাহিনী দিয়ে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে এবং রাতের আঁধারে ভোট ডাকাতি করেছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে সাধারণ মানুষ তাদের ভোট প্রয়োগ করতে পারেনি; ভোট চুরি করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে আছে, বলেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ নতুন আঙ্গিকে ছদ্মবেশী বাকশাল কায়েম করেছে। গণতন্ত্রের ন্যুনতম যেটুকু বাকি ছিল গত এক বছরে তারা সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। সংবিধানকে কেটে কেটে তারা তছনছ করে দিয়েছে।”
দেশের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়েছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, অর্থনীতি ভেঙে পড়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগকে জবাবদিহি করতে হয় না। দেশে আজ ধানের দাম নেই; অথচ চালের দাম অনেক বেশি। বেড়েছে পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম। সবকিছুর দাম বেড়েছে; কিন্তু কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
“শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমাদের কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুরা যে অন্ধকারে ছিল আজও তারা সেই অন্ধকারিই রয়ে গেছে।”
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, “বিএনপির ৩৬ লক্ষ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এক লক্ষ মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আমাদের প্রায় ৫শ নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। তাদের মা, স্ত্রী ও সন্তানেরা আজও পথ চেয়ে থাকে স্বজনরা ফিরবে এ আশায়।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রত্যেক জায়গায় কাউন্সিল হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলায়ও ওয়ার্ড থেকে শুরু করে ইউনিয়ন ও উপজেলায় পর্যায় পর্যন্ত কাউন্সিল হচ্ছে।
“এই কাউন্সিলে যারা নির্বাচিত হবেন, তাদের নেতৃত্বে মানে ঠাকুরগাঁও থেকেই দুর্বার আন্দোলন শুরু হবে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে। আর এই আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে।”
বালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে দলের ইউনিয়ন সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা সভাপতি তৈমুর রহমান, সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ প্রমুখ।