মজুরির দাবিতে সাভারে কারখানায় বিক্ষোভ-ভাংচুর

ঢাকার সাভারে দুইটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ ও ভাংচুর করেছে। এ সময় কয়েকশ শ্রমিক কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তারা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কও অবরোধ করে।

সাভার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Dec 2019, 12:15 PM
Updated : 24 Dec 2019, 12:15 PM

পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মঙ্গলবার দুপুরে সাভারের বিরুলিয়া সড়কের শাহীবাগ এলাকায় আজিম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল আউটার ওয়্যার লিমিটেড’ ও ‘গ্লোবাল ফ্যাশন গার্মেন্টস লিমিটেড’ কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের পর কারখানা দুটিতে একদিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

শ্রমিকরা জানায়, ‘গ্লোবাল আউটার ওয়্যার লিমিটেড’ ও ‘গ্লোবাল ফ্যাশন গার্মেন্টস লিমিটেড’ কারখানার প্রায় সাত হাজার শ্রমিক গত সোমবার থেকে তাদের নভেম্বর মাসের বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে কর্মবিরতিসহ বিক্ষোভ করে আসছে।

শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাসের জনি বলেন, মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশের পর কাজ না করে দাবি আদায়ে কর্মবিরতিসহ বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে কিছু শ্রমিক কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে ভিতরে ভাংচুর চালায়।

“এরপর কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলে শিল্প পুলিশের সদস্যরা শ্রমিকদের নিরাপদে কারখানা থেকে বের করে দেয়। কিন্তু বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা কারখানার মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ে বিক্ষোভ ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।”

তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপসহ লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পরে শ্রমিকরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের কাঁচা বাজারের সামনে সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দেয় বলে নাসের জনি জানান।

কারখানার সুইং অপারেটর জহিরুল ইসলাম, মো. শাহিন ও মো. লিটন বলেন, তাদের এক মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে, যা গত রোববার পরিশোধের কথা ছিল; কিন্তু কর্তৃপক্ষ রোববার কিছু শ্রমিককে বেতন দিলেও বাকিদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।

তারা বলেন, মঙ্গলবার শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে কারখানার ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. জাহিদুল হক ও সহকারী ব্যবস্থাপক (কোয়ালিটি) মইনুল ইসলাম আগামী ৩০ ডিসেম্বর বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা বললে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে।

আজিম গ্রুপের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও অর্থ) এম এ আকবর বলেন, “আমরা প্রতিমাসে নির্দিষ্ট সময়ে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করে থাকি। কিন্তু সম্প্রতি কারখানায় কাজ কমে যাওয়ায় এই মাসে আমাদের বেতন পরিশোধে সময় লাগছে। তবে খুব শিগগিরই শ্রমিকদের যাবতীয় পাওয়ানা পরিশোধ করা হবে।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাসের জনি আরও বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা কারখানায় ভাংচুরের পাশাপাশি সড়কে অবস্থান নিয়ে যানচলাচলে বিঘ্ন ঘটালে পুলিশ তাদেরকে সরিয়ে দেয়।

এছাড়া যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় কারখানায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পুলিশের বিশেষ সাজোয়া যান প্রস্তুত আছে বলে তিনি জানান।