সৌদি মুদ্রা বিক্রির কথা বলে ‘প্রতারণা’, গ্রেপ্তার ২

সৌদি আরবের মুদ্রা ‘রিয়াল’ বিক্রির কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোপালগঞ্জের পুলিশ।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Sept 2019, 06:23 AM
Updated : 9 Sept 2019, 06:36 AM

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, ফরিদপুর জেলার ভাংগা উপজেলার বালিয়া ও মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট থেকে রোববার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এরা হলেন ভাঙ্গা উপজেলার বালিয়া গ্রামের রাজ্জাক ব্যাপারীর ছেলে মতিন ব্যাপারী (৫৭) ও একই গ্রামের ধলা ধলা মিয়ার ছেলে সিরাজ মিয়া (৪৫)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তাররা গোপালগঞ্জ আন্তঃজেলা বৈদেশিক মুদ্রা প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং তাদের বিরুদ্ধে রিয়াল প্রতারণার দায়ে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের কাছ থেকে নগদ দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, সংঘদ্ধ প্রতারক চক্রটি সৌদি আরবের মুদ্রা বিক্রির লোভ দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন জেলার লোকজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে আসছিল। তারা ইতোমধ্যে সৌদি মুদ্রা বিক্রির কথা বলে শতাধিক লোকের কাছ থেকে ৮০/৯০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গত ৭ অগাস্ট প্রতারক চক্রটির দুই সদস্য মতিন ও সিরাজ কোটালীপাড়া উপজেলার সোনাখালী গ্রামের মসজিদের ইমাম আব্দুর রাজ্জাক গাজীর সঙ্গে একটি বাসে যাত্রীবেশে তার পাশের সিটে বসেন।

“এক পর্যায়ে তারা রাজ্জাককে সৌদি রিয়াল দেখিয়ে বলে, সৌদি ফেরত তাদের এক গরীব আত্মীয়ের কাছে ২০/৩০ হাজার সৌদি রিয়াল রয়েছে। কিন্তু তিনি গরীব হওয়ায় লোকজন সন্দেহ করবে বলে বিক্রি করতে ভয় পাচ্ছেন।

“তাই রাজ্জাকে রিয়াল বিক্রি করতে সাহায্য করলে তারা খুব উপকৃত হবে বলে জানান। তখন রাজ্জাক রিয়াল যাচাই করে সঠিক মনে হওয়ায় নিজেই কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।”

তিনি বলেন, সে মোতাবেক প্রতারক চক্রের সদস্যরা রাজ্জাককে গত ২৫ অগাস্ট পাঁচ লাখ টাকাসহ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভেন্নাবাড়ি বিশ্বরোডের সামনে যেতে বলে। পরে রাজ্জাক সেখানে গেলে প্রতারক চক্রের তিন সদস্য তাকে একটি শপিং ব্যাগে গামছা দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় একটি সৌদি রিয়ালের বান্ডিল দেখায়।

“রাজ্জাক ওই রিয়ালের জন্য তাদের পাঁচ লাখ টাকা দেয়। পরে প্রতারক চক্রের সদস্যরা রিয়ালের পরিবর্তে অন্য শপিং ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে টাকা নিয়ে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে। পরে মোবাইল বন্ধ করে দেয়।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার আরও বলেন, প্রতারক চক্রে সদস্যরা একই কায়দায় গত ৮ জুন নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার কবির মোল্লার কাছ থেকে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ১৮ জুন গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ার আলিম শিকদারের কাছ থেকে দুই ৫০ হাজার টাকা, ১০ মে কোটালীপাড়া উপজেলা বাদল কাজীর কাছ থেকে ৯৫ হাজার টাকাসহ মোট দশ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

তিনি বলেন, ভুক্তভুগীরা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে মোবাইল ট্রাকিং ও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে চক্রটির দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। চক্রের বাকি সদস্যদেরও শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হবে।