গাজীপুরে নারীর পলিথিন মোড়া খণ্ডিত লাশ উদ্ধার

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় নিজ ঘরে পলিথিনে মোড়ানো এক নারীর হাত-পা-মাথা ছাড়া পাঁচ খণ্ড লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2019, 03:14 PM
Updated : 14 August 2019, 04:01 AM

সোমবার রাতে শ্রীপুর উপজেলার আসপাডা মোড় এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।  

মঙ্গলবার দুপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ওই লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। 

শ্রীপুর থানার এসআই রাজীব কুমার সাহা বলেন, “ওই নারী নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার দেবকান্দা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের মেয়ে সুমি আক্তার (২৩) বলে প্রাথমিকভাবে ধালনা করা হচ্ছে।”

সুমি শ্রীপুরের গিলারচালার সাবলাইম গ্রিনটেক নামের একটি পোশাক কারখানার সুয়িং অপারেটর ছিলেন। স্বামী মো. মামুনের (৩৫) সঙ্গে আসপাডা মোড় এলাকায় নাইম উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন বলে এসআই রাজীব জানান।

প্রতিবেশীর বরাত দিয়ে রাজীব বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। এটা ছিল উভয়ের দ্বিতীয় বিয়ে। স্বামী ওই এলাকায় ইলেক্ট্র্রশিয়ানের কাজ করেন। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল।

নিহতের ছোট বোন বৃষ্টি একই কারখানায় চাকরি করেন এবং একই এলাকায় অন্যত্র ভাড়া বাড়িতে থাকেন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার বেতন দিয়ে কারখানায় ঈদের ছুটি হয়ে যায়। শুক্রবার তাদের একই সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। সুমি কারখানা থেকে ঈদ বোনাস ও বেতনসহ ৩০ হাজার টাকা পেয়েছেন। ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গিয়ে টিউবওয়েল বসানোর জন্য ওই টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।

বৃষ্টি বলেন, শুক্রবার সকালে বাড়ি যাওয়ার সময় সুমিকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও না পেয়ে তিনি ও তার স্বামী নবী হোসেন গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তারা বাড়ি পৌঁছে একাধিকবার বড় বোন ও ভগ্নিপতির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাদের ফোন বন্ধ পান।

শনিবার বৃষ্টি ও তার স্বামী আসপাড়া মোড় এলাকায় বোনের ভাড়া বাসায় যান। সেখানে কাউকে না পেয়ে ঘরের দরজার তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢোকেন। সেখানে কাউকে না পেয়ে ফিরে যান তারা। পরে সোমবার বিকালে আবার তারা সুমির ওই বাসায় যান এবং ঘরে ঢোকেন বলে জানান বৃষ্টি।

বৃষ্টি আরও বলেন, এক পর্যায়ে তারা ঘরে থাকা ড্রেসিং টেবিলের নিচ থেকে মেঝেতে রক্তাক্ত পানি গড়াতে দেখতে পান এবং দুর্গন্ধ পান। রাত ৮টার দিকে ড্রেসিং টেবিলটির ড্রয়ার খুলে চারটি পলিথিনে মোড়ানো পাঁচ টুকরা লাশ দেখতে পান। লাশের মাথা, হাত ও পা ছিল না। পরে বিষয়টি তারা শ্রীপুর থানা পুলিশে জানান।

শ্রীপুর থানার এসআই রাজীব বলেন, খবর পেয়ে পেয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্রীপুর থানা পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। 

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, পলিথিনে থাকা মাংস খণ্ডে মানুষের চামড়া ও নারীর আলামত ছিল। তবে সেখানে মাথা, হাত ও পা ছিল না। মঙ্গলবার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।