ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ বুধবার এই আদেশ দেন।
ওই আদালতের পিপি হাফেজ আহমেদ বলেন, বুধবার অভিযোগ গঠনের দিন নির্ধারিত থাকলেও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে তা পিছিয়ে নতুন দিন ঠিক করে আদালত।
গত ৩ জুলাই এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ফেনীর পরিদর্শক মো. শাহ আলম। অভিযোগপত্রে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ সিরাজ-উদ-দৌলা আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে যৌন নিপীড়ন করেন বলে তার মা থানায় মামলা করেন। ওই দিনই অধ্যক্ষ সিরাজকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।
এই মামলা তুলে না নেওয়ায় নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
গত ৬ এপ্রিল নুসরাত আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় গেলে কয়েকজন তাকে কৌশলে ডেকে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায়। পরে তাকে বোরকা পরা একদল লোক যৌন হয়রানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। নুসরাত এতে রাজি না হলে তারা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাতের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় এজহারভুক্ত আটজনসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের মধ্যে সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১২ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে অধ্যক্ষ সিরাজকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
হত্যা মামলায় অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিচার চলছে ফেনীর নারী ও শিশুনির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে।
নুসরাতের মায়ের দায়ের করা যৌন নিপীড়নের মামলা ও নুসরাতের ভাইয়ের দায়ের করা হত্যা মামলা উভয়ই ফেনীর পিবিআই তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।