কাপ্তাই হ্রদে পানি হ্রাস, নৌপথে যাতায়াতে দুর্ভোগ

বৃষ্টি না থাকায় কাপ্তাই হ্রদে নৌ চলচালে বিপর্য দেখা দিয়েছে; যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ছয় উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষ। এছাড়া কর্ণফুলি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে সচল আছে মাত্র একটি।

ফজলে এলাহী রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2019, 08:25 AM
Updated : 18 June 2019, 03:46 PM

বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুর জাহের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অন্যান্য বছর এ সময় পানি এত কমে না। এ বছর এখনও বৃষ্টি শুরু না হওয়ায় খুবই বিপাকে পড়তে হয়েছে আমাদের।

“বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে মাত্র একটি চালু আছে। সব ইউনিট সচল থাকলে প্রায় ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। এখন হচ্ছে মাত্র ৩৬-৩৮ মেগাওয়াট। আমরা এখন বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছি।”

লংগদু, জুরাছড়ি, বরকল ও বিলাইছড়ি উপজেলার মধ্যে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই কাপ্তাই লেক। আর বাঘাইছড়ি ও নানিয়ারচরেও প্রধান মাধ্যম এই লেক।

পানি শুকিয়ে যাওয়ায় তারা সবাই বিপাকে পড়েছেন।

জেলা পরিষদ সদস্য লংগদু উপজেলার মো. জানে আলম বলেন, “লংগদুতে নৌপথ বন্ধ মানেই জীবন ও জীবিকার দুর্বিষহ অবস্থা। আমরা লংগদুবাসীই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছি হ্রদের পানি কমে যাওয়ায়। বৃষ্টি হতে যত দেরি হবে আমাদের কষ্ট তত বেশি দীর্ঘায়িত হবে।”

প্রায় দেড় মাস ধরে এ অবস্থার ক্রমাবনতি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

রাঙামাটির অন্যতম বৃহৎ বাজার মাইনি। এই বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কামাল পাশা চৌধুরী বলেন, “হ্রদের পানি অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় বাজারের পণ্য পরিবহন ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। বড় নৌকা তো আসতেই পারছে না। ছোট্ট ছোট্ট নৌকায় পণ্য পরিবহনে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। পর্যাপ্ত পণ্যও আনা যাচ্ছে না।

“আবার অনেক দূর থেকে পণ্য বাজারে তুলতে শ্রমিকদের বাড়তি মজুরি দিতে হচ্ছে। একই সাথে প্রতি শনিবারের জমজমাট বাজারও এখন ঠিকমত জমছে না। কারণ দূর থেকে মানুষজন আসতে পারছে না। এখন বৃষ্টি হওয়া ছাড়া পানি বাড়ার তো কোনো সম্ভাবনাই নাই। তাই আমরা বৃষ্টির দিকেই তাকিয়ে আছি।”

অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল ও যাত্রী পরিবহন সংস্থার রাঙামাটির সভাপতি মঈনুদ্দিন সেলিম।

তিনি বলেন, “হ্রদের এই ছয়টি উপজেলায় প্রায় ৪৫টি যাত্রীবাহি লঞ্চ চলাচল করে। দেড় মাস ধরে সব বন্ধ। এই ব্যবসার সাথে জড়িত আমাদের প্রায় ১৩০০ শ্রমিক দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে। মানুষের ভোগান্তিরও শেষ নেই।

“বৃষ্টি হওয়া ছাড়া আপাতত কোনো সমাধানও নেই। তবে বিআইডব্লিউটিএ এবং স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে যদি সুভলংয়ের একটি পয়েন্টে সামান্য ড্রেজিংয়ের কাজ করত, তবু অন্তত লংগদু নৌপথে ফোরের মুখ পর্যন্ত লঞ্চ চালু রাখা যেত। কিন্তু তারা যেহেতু এটা করেননি, আমাদের কীইবা করার আছে।”