জামালপুরে গৃহকর্মীকে ‘ধর্ষণ’, শিক্ষা কর্মকর্তার শাস্তি দাবি

জামালপুরের এক গৃহকর্মী ‘ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা’ হওয়ার পর অন্যত্র বিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এক শিক্ষা কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেছে।

জামালপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 May 2019, 02:46 PM
Updated : 11 May 2019, 02:46 PM

মেলান্দহ উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে শনিবার সদর উপজেলার শরিফপুরের রঘুনাথপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।

এ ঘটনায় ওই গৃহকর্মী বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

ওই কিশোরী জানান, প্রায় এক বছর আগে সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেব মাস্টারের ছেলে মাজেদুল ইসলামের বাসায় তিনি গৃহকর্মীর কাজ নেন।

মাজেদুল ইসলামের স্ত্রী একটি স্কুলের শিক্ষিকা বলে জানান মেয়েটি।

তিনি মামলায় অভিযোগ করেন, কিছুদিন কাজ করার পর থেকেই গৃহকর্তা মাজেদুল ইসলাম স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রতি শনিবার তাকে নানাভাবে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন।

এক পর্যায়ে হাত ও মুখ বেঁধে ধর্ষণ করেন এবং এ ঘটনা ফাঁস করলে প্রাণনাশের হুমকি দেন, বলেন তিনি।

কিশোরী আরও বলেন, এরপর থেকে প্রতি শনিবার স্ত্রী স্কুলে চলে যাওয়ার পর নিয়মিত তাকে ধর্ষণ করে আসছিলেন।

“এ অবস্থায় আমার শারীরিক গঠনে পরিবর্তন দেখা দিলে মাজেদুল ইসলাম দুই মাস আগে পার্শ্ববর্তী পিঙ্গলহাটি গ্রামে রোকন নামে এক যুবকের কাছে আমাকে বিয়ে দেন।”

মামলায় বলা হয়, বিয়ের দুইমাস পার হলেও গৃহবধূর ঋতুস্রাব না হওয়ায় তার শাশুড়ি তাকে ওষুধ খাওয়ান এবং এরপর তার সাত মাসের একটি মৃত ছেলে হয়।

বিয়ের দুই মাসের মাথায় সাত মাসের সন্তান হওয়ায় স্বামীর পরিবার মেয়েটিকে বাবার বাড়ি রেখে যায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

জামালপুর সদর থানার ওসি মো. সালেমুজ্জামান বলেন, এ ঘটনা জানাজানির পর প্রতিবেশীদের কাছে মেয়েটি গৃহকর্তা মাজেদুলের ধর্ষণের বিষয়টি খুলে বললে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী মাজেদুলের বাড়ি ঘেরাও করে বিচার দাবি করে।

ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর থেকে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল পলাতক রয়েছেন বলে ওসি জানান।

এ ঘটনায় মাজেদুল ইসলামকে আসামি করে মেয়েটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন।

ওসি জানান, মেয়েটির গর্ভের মৃত সন্তানের ময়নাতদন্ত ও শিশুটির ডিএনএ পরীক্ষার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মাজেদুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ন্যক্কারজনক এই ঘটনার জন্য ওই সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাজেদুলের বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল মোতালেব ঘটনাটি সাজানো এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন।