জেলার পুলিশ সুপার সামসুন্নাহার জানান, শুক্রবার সকালে নিয়মিত মামলা দায়েরের পর তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার এএসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার এএসআই মুসরাফিকুর রহমান।
অপহৃত হয়েছিলেন কালিয়াকৈর উপজেলার বড়ইবাড়ি এলাকার রায়হান সরকার, লাবিব হোসেন ও শ্রীপুর উপজেলার চন্নাপাড়া এলাকার নওশাদ ইসলাম।
তাদের বন্ধু মো. তরিকুল্লাহ বলেন, গত বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে প্রাইভেট কারে করে তারা পাঁচ বন্ধু রাজধানী ঢাকার বাণিজ্যমেলায় যাচ্ছিলেন। পথে কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে শিলা-বৃষ্টি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নেওয়ার জন্য থামেন তারা।
“বন্ধু রাকিবুল রহমান ও আমি গাড়ি থেকে নিচে নামি। অন্য তিন বন্ধু গাড়িতেই ছিলেন। এ সময় দুটি গাড়ি নিয়ে হাজির হন এএসআই মামুন ও এএসআই মুসরাফিকুর। তারা সাদা পোশাকে ছিলেন। মুসরাফিকুরের মাইক্রোবাসে সাদা পোশাকের আরও কয়েকজন লোক ছিলেন। তিন বন্ধুকে টেনেহিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তোলেন সাদা পোশাকের লোকজন।”
তরিকুল্লাহ বলেন, এ সময় তিনি কালিয়াকৈর থানা ও অপহৃত তিন বন্ধুর পরিবারে ফোন করে খবর দেন।
পরে পুলিশ তিন বন্ধুকে উদ্ধার করে।
“সেখানে তিন বন্ধুর মুক্তির জন্য ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। টাকা না দিলে ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার হুমকি দেন তারা।”
পুলিশ খবর পেয়ে বুধবার রাতেই তিন বন্ধুকে উদ্ধার করে।
কালিয়াকৈর থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন মজুমদার বলেন, “তরিবুল্লাহ ও রাকিবুল রহমানের মাধ্যমে খবর পেয়ে বিষয়টি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় জানানো হয়। পরে দুই থানার সহযোগিতায় অপহৃত তিনজনকে বুধবার রাতে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়।
“ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে বৃহস্পতিবার এএসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মুসরাফিকুর রহমানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। আর শুক্রবার তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করেন অপহরণের শিকার রায়হান সরকার।”
শুক্রবার তাদের ইউনিফর্ম খুলে নিয়ে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয় বলে জানান জেলার অতিরিক্ষ পুলিশ সুপার মো. রাসেল শেখ।
পুলিশ সুপার তার কার্যালয়ে শুক্রবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “অভিযুক্ত দুই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। কোনো পুলিশ সদস্যের অপরাধের দায় বাংলাদেশ পুলিশ নেবে না। অপরাধ করলে কেউ ছাড় পাবে না। অপরাধ করলে তাদের ব্যক্তিগত দায়ভার হিসেবে নিতে হবে।
“আটক দুই কর্মকর্তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।”