সিলেটে নতুন কারাগারে বন্দি স্থানান্তর

সিলেটের পুরনো কারাগার থেকে শহরতলির বাদাঘাটে নবনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি স্থানান্তর শুরু করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। 

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2019, 12:42 PM
Updated : 11 Jan 2019, 12:42 PM

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ সুপার আব্দুল জলিল জানান, শুক্রবার সকাল ৭টায় কড়া নিরাপত্তায় নারী বন্দিদের স্থানান্তরের মধ্য দিয়ে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরে পুরুষদের নেওয়া হয়।

গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এ কারাগার উদ্বোধন করেন।

কারা সুপার জলিল বলেন, বর্তমানে তাদের কারাগারের দুই হাজার ৩০০ বন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত ৫০০ জন আর বিচারাধীন আছেন এক হাজার ৮০০ জন। 

“ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও র‌্যাবে চৌকস দলের সহযোগিতায় বন্দিদের স্থানান্তর করা হচ্ছে। শনিবারের মধ্যে স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।”

স্থানান্তর কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করতে নতুন ও পুরনো কারাগারে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সিলেটের বিভিন্ন এলাকা ও সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। 

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় যতটুকু নিরাপত্তা প্রয়োজন তার সবই নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত রাস্তায় নেওয়া হচ্ছে বাড়তি নিরাপত্তা।

“কারাগার স্থানান্তর প্রক্রিয়া সফল করতে সিলেট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির মাধ্যমে স্থানান্তর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।”

স্থানান্তর প্রক্রিয়ার কারণে আটক বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন দিন বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানান।

কারা সুপার জলিল জানান, বাদাঘাট এলাকায় নির্মিত এই কারাগারের রয়েছে ৬৪টি ভবন। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নির্মিত নতুন কারাগারে জায়গা হবে দুই হাজার বন্দির। সাতটি অত্যাধুনিক ভবনে রাখা হবে তাদের।

ভবনগুলোর মধ্যে পুরুষ বন্দিদের জন্য চারটি ও নারী বন্দিদের জন্য রয়েছে তিনটি। পুরুষ বন্দিদের চারটি ভবন ছয় তলাবিশিষ্ট আর নারী বন্দিদের একটি ভবন চারতলা ও দুটি দ্বিতল ভবন রয়েছে।

অন্য ভবনগুলোর মধ্যে আছে বন্দি ও কারাকর্মীদের হাসপাতাল, রান্নাঘর, স্টোর রুম, দোতলা একটি রেস্ট হাউসও, ডে কেয়ার সেন্টার, মসজিদ, লাইব্রেরি।

জলিল জানান, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের ৩০ একর জায়গার মধ্যে মূল কারাগারে রয়েছে ১৪ একর ও বাইরে রয়েছে ১৬ একর জায়গা। কারাগারের বাইরের জায়গায় থাকছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন, ক্যান্টিন, বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার রুম, প্রশাসনিক কার্যালয়। 

“সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস বেশ পুরনো। ১৭৮৯ সালে ব্রিটিশ আমলে নগরীর ধোপাদীঘির পারে ২৪ দশমিক ৬৭ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে সিলেট কারাগার। ১৯৯৭ সালের ৩ মার্চ এটি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তরিত হয়। ধারণক্ষমতা দাঁড়ায় এক হাজার ২১০ জনে। 

“বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। বন্দিদের মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়টি বিবেচনায় এনে সিলেট নগর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার বাদাঘাটে ৩০ একর জমির ওপর নতুন কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।” 

২০১১ সালে ২২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এ কারাগার নির্মাণ শুরু হয় বলে তিনি জানান।