রোগে-দারিদ্র্যে কাহিল প্রখ্যাত এই বাউলশিল্পী মঙ্গলবার হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালের চিকিৎসক আরিফ হোসেন বলেন, “তার ব্রেনে রক্ত চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। হার্টের সমস্যাও রয়েছে। তবে ভর্তির পর থেকে অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে।”
বছর কয়েক আগে দুর্ঘটনায় আহত হন এই শিল্পী, কিন্তু চিকিৎসা হলেও পুরোপুরি সেরে ওঠেননি তিনি। কিছুদিন পরপরই অসুস্থ হন। নিয়মিত ওষুধপথ্য খেতে হচ্ছিল।
সুফিয়ার মেয়ে পুষ্প খাতুন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই তিনি অসুস্থ। জীবিকার তাগিদে অসুস্থ অবস্থায়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাইতে যেতেন। রোগের সঙ্গে লড়তে লড়তে স্তব্ধ হয়ে যেতে বসেছে তার কণ্ঠ।
“সবশেষ মঙ্গলবার তিনি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে, পরে এখানে আনা হয়।”
কিন্তু সংসারে স্বচ্ছলতা না থাকায় পরিবারটিকে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।
তিনি তার সুচিকিৎসার জন্য সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
তাদের বসবাস সাভারের জামসিং এলাকায়।
সেখানে তিন শতাংশ জায়গায় টিনশেড ঘরে সুফিয়া, তার মেয়ে পুষ্প আর নাতি থাকেন। সুফিয়ার স্বামী কুষ্টিয়ায় থাকেন। তার সঙ্গে তাদের তেমন যোগাযোগ নেই। তিনি গান গেয়ে যা আয় করেন তা দিয়েই কোনো রকমে চলে তাদের দিন।
পুষ্প বলেন, সুফিয়া ইংল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, কাতার, ইটালি, হংকং, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, চীন ও ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গান গেয়েছেন। পেয়েছেন ৩০টি জাতীয় ও ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার।
১৯৬১ সালে রাজবাড়ী জেলার রামদিয়া গ্রামে জন্ম সুফিয়ার। বাবার নাম খোকন হালদার আর মা টুলু হালদার। ১৪ বছর বয়সে গ্রাম্য এক অনুষ্ঠানে গান গেয়ে শিল্পী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
এখন বয়সের তুলনায় অনেক বেশি বুড়িয়ে গেছেন সুফিয়া। চিনতে বেশ কষ্ট হয়।
সাভারে তার অনেক ভক্ত আছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থতার খবর শুনে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছেন।