ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রেনের যাত্রা শুরু

উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকা-পঞ্চগড় আন্তঃনগর রেল চলাচল শুরু হয়েছে।

পঞ্চগড় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Nov 2018, 12:44 PM
Updated : 11 Nov 2018, 05:33 AM

পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোশাররফ হোসেন জানান, সকালে স্টেশন চত্বরে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুল কালাম আজাদ ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন।

এরপর সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে অতিথিরা সবুজ পতাকা উড়ালে ১৩টি বগি নিয়ে ‘দ্রুতযান’ ট্রেনটি পঞ্চগড় স্টেশন ছেড়ে যায়। রাত ৯টায় ‘একতা এক্সপ্রেস’ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এর মধ্য দিয়ে দেশের দীর্ঘতম রেল যোগাযোগের সূচনা হলো।

এই রুটে ‘দ্রুতযান’ ও ‘একতা এক্সপ্রেস’ চলাচল করবে।

মোশাররফ হোসেন বলেন, ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় স্টেশন পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব প্রায় ৫০৫ কিলোমিটার। এটিই দেশের সবচেয়ে বেশি দীর্ঘ রেলরুট।

তিনি আরও জানান, সাপ্তাহিক বিরতিহীন এই দুই ট্রেনে ১৩টি করে বগি রয়েছে। এর মধ্যে একতা এক্সপ্রেসে ৮৯৪টি এবং দ্রুতযানে ৯৪৪টি আসন আছে। আপাতত পঞ্চগড়ের জন্য দুই ট্রেনে ৩৫টি করে শোভন চেয়ার, একটি এসি চেয়ার এবং একটি দুই জনের নন এসি বার্থ রাখা হয়েছে।

অতিরিক্ত সচিব আবুল কালাম আজাদ উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, প্রতিটি জেলা শহর থেকে রেলপথ উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পঞ্চগড়-ঢাকা রেলপথে আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালু করা হলো।

এই রেলপথকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য সমীক্ষার কাজ চলছে বলে জানান তিনি।

সরেজমিন দেখা গেছে, আন্তঃনগর ট্রেন উদ্বোধন উপলক্ষ্যে লাল-সবুজ রংয়ের দ্রুতযান ট্রেনটিকে ফুল দিয়ে সাজানো হয়। বাদ্য বাজানো হয়। হাজারো নারী পুরুষের ভিড়ে স্টেশন চত্বরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিল।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রথম দিনের যাত্রীদের রজনীগন্ধার শুভেচ্ছা জানিয়ে টি শার্ট উপহার দেওয়া হয়। অতিথিরা তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও করমর্দন করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত পঞ্চগড় চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি মেহেদী হাসান বাবলা বলেন, গত বছরের ১৭ জুন থেকে শাটল ট্রেনের মাধ্যমে দিনাজপুর হয়ে এখানকার যাত্রীরা ঢাকা যাতায়াত করত।

“প্রায় দেড় বছর পর সরাসরি ঢাকা-পঞ্চগড় যাতায়াতের সুবিধা পেয়ে আমরা বর্তমান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তবে আসনসংখ্যা বৃদ্ধিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নের প্রত্যাশা করছি।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম সুজন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী মো. রফিকুল আলম, জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন, পুলিশ সুপার গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ৩০ জানুয়ারি পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত ৯৮২ কোটি টাকা ব্যায়ে ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ২০১৬ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। গত বছরের ১৭ জুন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত শাটল ট্রেন উদ্বোধন করেন। ‘দ্রুতযান’ ও ‘একতা’ এর আগে দিনাজপুর থেকে ঢাকা যাতায়াত করত।