পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া পথে ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা

ফেরির সমস্যা, ঈদের কম ছুটি, ভিআইপি বিড়ম্বনাসহ নানা কারণে এবার ঈদে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে যাত্রী ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিমাহবুব আলম রাসেল, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2018, 04:26 PM
Updated : 11 June 2018, 04:51 PM

এ কারণে বিআইডব্লিউটিসি এবং পুলিশ প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি, ঈদের তিন দিন আগে ট্রাক পারাপার বন্ধ, বিপুল পুলিশ সদস্য মোতায়েন, চাঁদাবাজি এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা।

মানিকগঞ্জের শিবালয় থানার ওসি মো. হাবিবুল্লাহ সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গতবারের ঈদের আগে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ১৯টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হয়েছে। এবার ফেরির স্বল্পতার পাশাপাশি ঘন ঘন ফেরি বিকল হওয়ার কারণে যাত্রীদের দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ১৭টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হয়। রোববার একটি রো রো ফেরি এই পথে নৌবহরে যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে আটটি রো রো, ছয়টি ইউটিলিটি ও চারটি কে-টাইপসহ মোট ১৮টি ফেরি রয়েছে। তবে ফেরিগুলো পুরাতন হওয়ায় মাঝেমধ্যে বিকল হয়ে পড়ে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এক-দুটি ফেরি প্রায়ই স্থানীয় কারখানায় মেরামতে থাকে। এতে ফেরির ট্রিপ সংখ্যা কমে যাওয়ায় যানবাহন পারাপার ব্যাহত হয়।

“এছাড়া ভিআইপিদের বিড়ম্বনাও রয়েছে। ঈদের আগে এই নৌপথে ভিআইপিদের ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপারে প্রতিদিনই একটি ফেরি রিজার্ভে রাখতে হয়। এসব কারণে ঈদের আগে অতিরিক্ত সাধারণ যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ব্যাঘাত ঘটে।”

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জিল্লুর রহমান বলেন, বিগত ঈদের আগে লম্বা ছুটি ছিল। এ কারণে পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে চাপ থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ছিল।

“কিন্তু এবার ঈদের আগে ছুটি কম থাকায় ঈদের দুই দিন আগে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়ে যাবে। এতে যানবাহনের দীর্ঘ সারিতে আটকে থাকতে হতে পারে।”

এ দিকে পুলিশ এবং যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের অবস্থা বেহাল থাকায় সেখানে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় অনেক যাত্রী ও যানবাহন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া পথ ব্যবহার করতে পারে। এতে পাটুরিয়ায় অতিরিক্ত যানবাহন ও যাত্রীর কারণে এই পথে ভোগান্তির আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া মুন্সীগঞ্জের মাওয়া সড়কে যানজট থাকায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলগুলোর ছোট গাড়িগুলো পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া পথ ব্যবহার করছে। এভাবে ছোট গাড়ির চাপ বাড়তে থাকলে ঈদে পাটুরিয়ায় ফেরির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে। এছাড়া রাজবাড়ির দৌলতদিয়া প্রান্তে অব্যবস্থাপনার কারণে পাটুরিয়ায় যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে সমস্যা আরও বেড়ে যায়।

সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের নয়াডিঙ্গী থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক পুলিশ ও আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকেব। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও অনিয়ম ঠেকাতে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ১৫টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ঈদের আগে তিন দিন ও পরের তিন দিন সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে। এসব ট্রাক ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে বারবাড়িয়া ও গোলড়া এলাকায় রাখা হবে। তবে জরুরি পণ্যবাহী (পচনশীল পণ্য, ওষুধ ও শিশুখাদ্য) ট্রাক পারাপার হতে পারবে।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ে সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মহিউদ্দিন রাসেল বলেন, ঈদযাত্রায় ফেরির সমস্যা থাকবে না। মঙ্গলবার আরেকটি রো রো ফেরি এই নৌবহরে যুক্ত হবে। তাছাড়া কোনো ফেরি বিকল হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামতের ব্যবস্থা রয়েছে।