প্রয়াণ দিবসে সুচিত্রা সেনকে ভক্তদের স্মরণ

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জন্মভূমি পাবনায় মহানয়িকা সুচিত্রা সেনের চতুর্থ প্রয়াণ দিবস উদযাপন করেছেন তার ভক্তরা।

সৈকত আফরোজ আসাদ পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2018, 02:31 PM
Updated : 17 Jan 2018, 02:38 PM

বুধবার সকালে হেমসাগর লেনে সুচিত্রার পৈতৃক বাড়িতে তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদ।

এছাড়া পাবনা ড্রামা সার্কেল, একুশে বইমেলা পরিষদ, লালন স্মৃতি পরিষদ, মহীয়সী পাঠ চক্রসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আলোচনা সভার আয়োজন করে।

২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি ৮৩ বছর বয়সে বাংলা চলচ্চিত্রের এই জনপ্রিয় নায়িকা মৃত্যুবরণ করেন।

দিনটি পালনোপলক্ষে সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদ শহরের গোপালপুরে নিজ কার্যালয়ে স্মরণসভার আয়োজন করে।

সংসদের সভাপতি জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি হাবিুবুর রহমান স্বপন, লালন পরিষদ সভাপতি রেজাউল করিম মনি, পাবনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্পাদক কাজী বাবলা, সৈকত আফরোজ আসাদ, তপু আহমেদ, রিজভী জয় প্রমুখ।

স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ে কিংবদন্তি এই নায়িকার পাবনার বাড়ি জামায়াতে ইসলামীর দখলমুক্ত করা হলেও সংরক্ষণের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সীমিত পরিসরের সংগ্রহশালায় কিছু ছবি আর ফেস্টুন ছাড়া তেমন কিছু না থাকায় দর্শনার্থীরা হতাশ হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।

বক্তারা সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়িতে পূর্ণাঙ্গ ফিল্ম ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার দাবি জানান।

১৯৩১ সালের ৫ এপ্রিল পাবনার নানার বাড়িতে রমা দাশগুপ্ত জন্ম নেন, যিনি পরবর্তীতে সুচিত্রা সেন নামে পরিচিত হন। তিনি কৃষ্ণা দাশগুপ্ত হিসাবেও বন্ধুদের কাছে পরিচিত ছিলেন। পাবনা শহরের দিলালপুরের হেমসাগর লেনের বাড়িতে কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। সুচিত্রা সেন পাবনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় পশ্চিমবঙ্গে চলে যান তারা।

সুচিত্রা সেনের বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন পাবনা পৌরসভার সেনিটারি ইনেস্পেক্টর এবং মা ইন্দিরা দাশগুপ্ত একজন গৃহবধূ। বাবা-মায়ের পঞ্চম সন্তান ছিলেন তিনি।

কলকাতায় দিবানাথ সেনের বিয়ে হয় সুচিত্রার। ১৯৫২ সালে শেষ কোথায় ছবির মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হলেও ছবিটি মুক্তি পায়নি। ১৯৫৩ সালে তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা ছবি ‘সাত নম্বর কয়েদি’। ওই বছরেই মুক্তি পায় উত্তম কুমারের সঙ্গে তার ছবি ‘সাড়ে চুয়াত্তর’।

‘সাত পাকে বাঁধা’ ছবির জন্য তিনি প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী হিসেবে ১৯৬৩ সালে মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন। ভারত সরকার তাকে ১৯৭২ সালে ‘পদ্মশ্রী’ এবং ২০০৫ সালে ‘দাদা সাহেব ফালকে’ পুরুস্কার দেয়। কিন্তু তিনি ‘দাদা সাহেব ফালকে’ পুরুস্কার গ্রহণে অপরাগতা প্রকাশ করেন, কেননা তিনি ততদিনে লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার দেয়। সে সময় মেয়ে মুনমুন সেন তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন।