যশোরে গুমের অভিযোগ ১৬ পুলিশের বিরুদ্ধে

অপহরণের পর দুইজনকে গুমের অভিযোগে যশোর কোতোয়ালি থানার ১৬ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক তরুণের মা।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2017, 10:29 AM
Updated : 14 Nov 2017, 11:47 AM

যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার হিরা খাতুন মঙ্গলবার যশোরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শাহিনুর রহমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

হিরার আইনজীবী অজিত কুমার দাস বলেন, অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

তবে পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার দুই তরুণকে সঙ্গে নিয়ে আসামি ধরতে যাওয়ার পর তারা পালিয়ে গেছে।

মামলার আসামিরা হলেন- এসআই এইচএম শহিদুল ইসলাম, আমির হোসেন, হাসানুর রহমান, এএসআই রাজন গাজী, সেলিম মুন্সি, বিপ্লব হোসেন, সেলিম আহম্মেদ, কনস্টেবল আরিফুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম, মো. রমজান, হাবিবুর রহমান, আবু বক্কার, মিজান শেখ, মাহমুদুর রহমান, রাজিবুল ইসলাম ও টোকন হোসেন।

হিরা বলেন, “গত ৫ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে আমার ছেলে সাইদ (১৮) ও ছেলের বন্ধু শাওন শহরের পৌর পার্কে বেড়াতে যায়। বেলা ১২টার দিকে সাব্বির হোসেন নামে একজন আমাকে মোবাইল ফোনে জানান, পুলিশ তাদের আটক করেছে।”

ওই পার্কে গিয়ে সাইদ ও শাওনকে পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে যেতে দেখেছেন বলে দাবি করেন হিরা।

তিনি বলেন, “এ সময় আমি দৌড়ে গাড়ির কাছে গিয়ে আটকের কারণ জানতে চাইলে তারা আমাকে থানায় গিয়ে কথা বলতে বলেন। পরে থানার সামনে গিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে থাকলেও আমাকে থানায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

“সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুই পুলিশ আমাকে ডেকে নিয়ে ছেলেকে ছাড়ানোর জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন। এর দুই দিন পরে শুনতে পাই সাইদ ও শাওন পালিয়ে গেছে। পরে শুনতে পাই পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলায় তারা পালিয়ে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়।”

এরপর তিনি ছেলের সন্ধানে পুলিশের কাছে গেলে পুলিশ কোনো সহযোগিতা করেনি বলে দাবি করেন। পরে গত ৩০ মে ছেলের খোঁজ চেয়ে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি।

তার ছেলে ও ছেলের বন্ধুকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ ও তাদের হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে বলে আশঙ্কা তার।

এ বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাহউদ্দিন শিকদার বলেন, “অভিযোগটি পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পুলিশকে বেকায়দায় ফেলার জন্য একটি কুচক্রী মহল এ কাজটি করেছে। তারপরও আদালত যেহেতু তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে, তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বোঝা যাবে।”

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল বাশার মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যেদিন সাইদ ও শাওনকে পুলিশ আটক করে তার আগের দিন (৪ এপ্রিল) রাতে যশোর শহরের টাউন হল মাঠে জনসমক্ষে পাপ্পা নামে এক যুবক খুন হন।

“ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মূল আসামি ছিলেন সাইদ ও শাওন। এছাড়া এরা আরও ১০/১১টি মামলার আসামি, যার মধ্যে ৫/৬টি হত্যা মামলা রয়েছে।”

তিনি বলেন, গত ৫ এপ্রিল সাইদ ও শাওনকে আটক করে পুরিশ। পরে তাদের নিয়ে পাপ্পা হত্যার অন্যান্য আসামিদের ধরতে শহরের শংকরপুরে অভিযানে যায় পুলিশ। তখন তারা পালিয়ে যান।