বর্ষার শুরুতে মধুমতিতে পানি বৃদ্ধি শুরু হলে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের চরভাটপাড়া থেকে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের লংকার চর পর্যন্ত চার কিলোমিটার এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দেয়।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ও হুমকিতে থাকা মানুষ বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছে। ভাঙনরোধে খুব শিগগিরই নদী শাসনের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এছাড়া এ তিন গ্রামের ৫০০ বাড়িঘর, দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি বাজার, একটি মসজিদ ও হাজার হাজার একর ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙনের মুখে রয়েছে।
প্রতি বছরই ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। তবে এ বছর তা সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তারা।
পারকরফা গ্রামের আকরাম শেখ (৭৫) বলেন, এ বছরের জুলাই মাসে মধুমতির নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে ভাঙন শুরু হয়। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি নদীর পানি কমতে শুরু করায় ফের ভাঙ্ন দেখা দেয়।
একই গ্রামের কৃষক আব্দুল ওহাব সরদার (৮০) বলেন, নদীর ভাঙনে তার ৫০ শতাংশ জমি, গাছপালা ও ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশ জমিও ভাঙনের মুখে রয়েছে।
“এ জমি রক্ষা করতে না পারলে পরিবার পরিজন নিয়ে পথে নামতে হবে।”
লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের লংকারচর গ্রামের দেলোয়ারা বেগমেরও (৬৫) সব কিছু গ্রাস করেছে নদী। এখন অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটলেও কারো সাহায্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ভাঙ্ন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, মধুমতি তার বাড়িঘর, জমিসহ সব কিছু গ্রাস করায় এখন মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু নেই; নেই রান্না বান্নার ব্যবস্থাও।
“সেখানে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ওই এলাকার নদী ভাঙন প্রতিরোধে আমরা ইতোমধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।”
এ ব্যাপারে প্রকল্প গ্রহণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প পাশ হলেই নদী শাসন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।