ফেনীতে ৩০ গ্রাম প্লাবিত, দুই স্কুলে পাঠদান বন্ধ

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ফেনীর ছয় উপজেলার ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2017, 12:14 PM
Updated : 25 July 2017, 02:39 PM
বড় ফেনী, ছোট ফেনী, মুহুরী, কহুয়া, সিলোনীয়া ও ডাকাতিয়া নদীর পানি বেড়ে ফেনী সদর, দাগনভূইয়া, ছাগনাইয়া, ফুলগাজী ও সোনাগাজীর এসব গ্রাম প্লাবিত হয়। বন্ধ রয়েছে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।

দাগনভূইয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন মামুন জানান, বন্যার পানিতে রাজাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর, গনিপুর, জয়নারায়ণপুর, নন্দিরগাঁও, সাপুয়া, কামার পুকুরিয়া, রামচন্দ্রপুর ও ভবানীপুরের একটি অংশ প্লাবিত হয়েছে।

“সিন্দুরপুর ও রাজাপুর ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বাড়ি ঘরে হাঁটু পানি জমেছে। রাস্তাগুলো প্রায় দুই ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।”

সিন্দুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর নবী জানান, তার ইউনিয়নের শরিফপুর, গৌতমখালী, কইখালি, নেকান্তরপুর, উত্তর কৌসুল্লা, রঘুনাথপুর, সত্যপুর ও চন্দ্রপুর গ্রামের একটি অংশ প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

শরিফপুরের গুচ্ছ গ্রামের ১৫ পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে বলে জানান তিনি।

দাগনভূইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ভূঁঞা বলেন, সিন্দুরপুর ইউনিয়নের উত্তর কৈখালী, দক্ষিণ কৈখালী ও গৌতমখালী গ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ওই এলাকায় দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার্ত লোকদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

“তাছাড়া বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পানি ওঠায় উপজেলার জাফর ইমাম উচ্চ বিদ্যালয় ও সেকান্দরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।”

স্থানীয়ভাবে খবর নিয়ে জানা গেছে, সোনাগাজী উপজেলার চর চান্দিয়া, চর দরবেশ ও সোনাগাজী সদর ইউনিয়নে সোমবার রাতে নদী উপকূলের ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি গ্রামে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।

উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ পূর্ব চর চান্দিয়া, পূর্ব চর চান্দিয়া, দক্ষিণ চর চান্দিয়া, পূর্ব বড়ধলী, সদর ইউনিয়নের চর খোন্দকার, সুজাপুর, চর খোয়াজ, চর দরবেশ ইউনিয়নের পশ্চিম চর দরবেশ, দক্ষিণ চর দরবেশ, দক্ষিণ পশ্চিম চর দরবেশ গ্রামগুলোতে পানি প্রবেশ করে ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, সম্প্রতি নদী ভাঙনে বেড়ি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় জোয়ারের পানিতে উপকূল প্লাবিত হয়েছে।

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মিনহাজুর রহমান বলেন, জোয়ার ও বৃষ্টির পানির চাপে ভেঙে যাওয়া বাঁধ দ্রুত সংস্কার করা হবে।

অপরদিকে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কিসিঞ্জার চাকমা জানান, উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে আনন্দপুর ইউনিয়নের পেঁচিবাড়িয়া ও চন্দনবিয়া গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।

ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিদা ফাতেমা চৌধুরী বলেন, ছাগলনাইয়ার মহামায়া ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে রাধানগর ইউনিয়নের নিজপানুয়া, নিচিন্তা ও কাশিপুর গ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অনেক গ্রামীণ সড়ক, বীজতলা ও পুকুর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

এছাড়া ফেনীর সদর উপজেলার শর্শদি ও পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের আবুপুর, এলাহিগঞ্জ, পাঁচগাছিয়ার নিচু এলাকাও প্লাবিত হয়েছে।