লালমনিরহাট সীমান্তে যুবকের লাশ, নিয়ে গেছে বিএসএফ

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা সীমান্তে পড়ে থাকা অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির লাশ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ নিয়ে গেছে, যাকে তারাই হত্যা করেছে বলে বিজিবির ভাষ্য।

লালমনিরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2017, 12:06 PM
Updated : 6 July 2017, 12:06 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠকের পর ২৩/২৪ বছর বয়সী ওই যুবকের লাশ ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়।

বুধবার রাতে কোনো এক সময় লাশটি হাতীবান্ধা উপজেলার দইখাওয়ার আমঝোল সীমান্ত সংলগ্ন কাঁটাতারের বেড়ার এপাশে নো ম্যান্স ল্যান্ডে ফেলে রাখা হয়। 

নিহতের পায়ে গুলির এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটুনির আঘাতের মতো চিহ্ন রয়েছে।

স্থানীয় কেউ সনাক্ত করতে না পারায় বিএসএফ লাশটি নিয়ে যায় বলে এলাকাবাসী ও বিজিবি জানিয়েছে।

বিজিবি ও স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে সীমান্তের এপারে নো ম্যান্স ল্যান্ডে লাশ পরে থাকতে দেখে বিজিবি প্রতিবাদের পাশাপাশি পতাকা বৈঠকের আহবান জানায় বিএসএফ বরাবর। দুপুর দেড়টার দিকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ৯০৫ এর ১০ নম্বর সাব পিলারের ঘটনাস্থলের কাছে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠকে হয়। সেখানে বিএসএফ ওই লাশ সনাক্তের জন্য বাংলাদেশের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ চার বাসিন্দাকে নিয়ে যায়। তাদেরই একজন বৃদ্ধ চান্দের আলী।

চান্দের আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লাশটি স্থানীয় কারও নয়। তবে তাকে পায়ে গুলি করার পর নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার পুরো শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন আছে।”

একই কথা বলেন লাশ সনাক্তের জন্য কাঁটাতার সংলগ্ন নো ম্যান্স ল্যান্ডে যাওয়া আমঝোল গ্রামের যুবক আশরাফুল।

তিনি বলেন, লাশটির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্নের পাশাপাশি ডান পায়ে হাঁটুর উপরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। স্থানীয়রা লাশটি চিনতে না পারায় বেরা ২টার দিকে নো ম্যান্স ল্যান্ডের কাঁটাতারের এপার থেকে লাশ নিয়ে যায় বিএসএফ।

এদিকে কাঁটাতারের এপারে লাশ পড়ে থাকার খবরে কয়েক হাজার মানুষকে জড়ো হতে দেখা গেছে। নিহত ওই ব্যক্তি বাংলাদেশি নাকি ভারতীয় নাগরিক তাও জানা যায়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলার গোতামারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম সাবু মিয়া বলেন, লাশটি স্থানীয়রা চিনতে পারেনি বলে বিএসএফ নিয়ে গেছে।

হাতীবান্ধার দৈখাওয়া বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আব্দুল কাদের বলেন, এ নিয়ে বিজিবি-বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে অনানুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠক হয়েছে।

“সেখানে ভারতের ১০০ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার ইন্সপেক্টর মুখেশ কুমার লাশ সনাক্তের আহবান জানালে আমরা জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় চার ব্যক্তিকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। কিন্তু কেউ লাশটি চিনতে না পারেনি।”

পরে বিএসএফ লাশটি ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে গেছে বলে জানান কাদের।

বিএসএফ ওই যুবককে হত্যার পর লাশ ফেলে রেখে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, বলেন কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আব্দুল কাদের।