এ ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল করে এক কলেজ অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছে ছাত্রদল।
Published : 24 Jan 2025, 12:49 AM
কক্সবাজার সরকারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ ইভেন্টে এক ছাত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবয়ব নিয়ে অংশ নেন। যেখানে ওই ছাত্রী খালেদা জিয়াকে ‘মিমিক্রি’ (কণ্ঠ নকল) করেন।
তবে কথা বলার এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর আচরণে ‘নানা ইঙ্গিত পূর্ণ’ হওয়ার অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিষয়টি ব্যঙ্গ দাবি করে তার অংশগ্রহণ বাতিল করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে ওই কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ সোলাইমানের পদত্যাগ দাবি করেছে জেলা ছাত্রদল।
তবে ঘটনাটি নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, “ওই শিক্ষার্থীকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিযোগিতা থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।”
ওই শিক্ষার্থী ইতিহাস বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আতাহার সাকিব বলেন, এমন অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিক ওই ছাত্রীকে প্রতিযোগিতা থেকে বাতিল করে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আপত্তি ওঠায় পরবর্তীতে ওই ছাত্রীকে অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন সে এটি নিছক একটি অভিনয় ছিল বলে দাবি করেন। খালেদা জিয়ার বিভিন্ন বক্তব্য শুনে এই স্ক্রিপ্ট তৈরি করেছেন তিনি।”
এরপরও অভিনয়টি ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে না পারায় ওই ছাত্রী তাৎক্ষণিক সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন বলে জানান সাকিব।
কলেজ ছাত্রদলের সদস্য মিনহাজ উদ্দিন বলেন, “খালেদা জিয়াকে নিয়ে করা অভিনয়টি ব্যঙ্গ ছিল। যা আপত্তিকর হওয়ায় আমি ওই ছাত্রীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলি। কিন্তু কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে গিয়ে ক্ষমা চাওয়ানো হয়।”
তবে এ ঘটনার পেছনে কারো ইন্ধন রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে অধ্যক্ষকে অনুরোধ জানানো হলেও তিনি শোনেননি বলে দাবি মিনহাজের।
ঘটনাটি অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর বিএনপি নেতাকর্মীরা নিন্দা জানিয়েছেন। প্রতিবাদে সন্ধ্যায় জেলা ছাত্রদলের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল থেকে ওই কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করা হয়।
এ সময় ছাত্রদল নেতা শাহদাত হোসেন রিপন বলেন, “কলেজ অধ্যক্ষ একটি নির্দিষ্ট দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে বেগম জিয়াকে নিয়ে এমন কর্মকাণ্ড করার অনুমতি দিয়েছেন। আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি।”
অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, “ওই ছাত্রীকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিযোগিতা থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।”
এ ঘটনায় কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করেছেন।
তবে এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।