অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, তাদের কাছে একটাই বক্তব্য, ফ্যাসিবাদের দোসররা যেন মাথাচাড়া দিতে না পারে।
Published : 16 Sep 2024, 11:21 PM
শেখ হাসিনাকে হিটলার ও তার দল আওয়ামী লীগকে নাৎসি বাহিনীর সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, “হিটলার গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেছিলেন। শেখ হাসিনারও গ্যাস চেম্বার ছিল। সেটা হল ‘আয়নাঘর’।”
সোমবার বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সহায়তা দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “যারা নিজের দেশের মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে, দিনের পর দিন গুম করে রাখে, তারা কখনোই রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী হতে পারে না। তারা নিষ্ঠুর শয়তানের প্রেতাত্মা।
“পাচার করা অর্থ ব্যবহার করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার প্রভুরা বাংলাদেশের ভেতরে অন্তর্ঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করছে।”
তিনি দাবি করেন, “দেশ থেকে পাচার হওয়া সাড়ে ১৭ লাখ কোটি টাকা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও তাদের অনুগত ব্যবসায়ীর হাতে আছে। তারা ওই টাকা গণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের জন্য খরচ করছে।”
ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত থেমে নেই দাবি করে তিনি বলেন, “সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। শেখ হাসিনার প্রভুরা আছেন তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য। বাংলাদেশের ভেতর অন্তর্ঘাত সৃষ্টি করার জন্য তারা আছে।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, “তাদের কাছে আমাদের একটাই বক্তব্য, ফ্যাসিবাদের দোসররা যেন মাথাচাড়া দিতে না পারে।”
শেখ হাসিনার শাসনামলে সংবাদমাধ্যমের মালিকরা ‘নির্লজ্জ চামচামি করেছে’ মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, “সাংবাদিক বন্ধু যারা রয়েছেন, আমাদের ওপর নিপীড়ন, নির্যাতন, আমাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া, গুম-খুনের খবরগুলো আন্তরিকতার সঙ্গে ছাপানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মালিকরা কী করেছে? তারা বলেছে, ‘আপনি (শেখ হাসিনা) মরে গেলেও আপনার সঙ্গে থাকব।’ যখন ছাত্রদের জীবন যাচ্ছে, কচি কচি বাচ্চারা রাস্তায় দাঁড়াচ্ছে। তখন এদের বলা হচ্ছে রাজাকারের বাচ্চা। আর এটা ঢালাওভাবে প্রচার করা হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায়। কারণ, বেছে বেছে আওয়ামী লীগের পছন্দের লোকদের মিডিয়ার মালিক করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “১৩-১৪ সালে জিয়াউর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকীর দিন কোনো একটি মিডিয়া সারাদিন জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে। এগুলো কি আমরা ভুলে গেছি?”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত বগুড়ার তিনজনের পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ নামে একটি সংগঠন। রুহুল কবির রিজভী ওই সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা।
যে তিন নিহতের পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- রিকশাচালক কমর উদ্দিন বাঙ্গি, সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শাকিল হাসান মানিক ও শ্রমিকদল নেতা জিল্লুর রহমান।
ওই তিনজনের মধ্যে কলেজছাত্র ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। অন্য দুইজন বগুড়ায়।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনটির উপদেষ্টা, কেন্দ্রীয় বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও সাবেক সংসদ সদস্য এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত এবং আশরাফ উদ্দিন বকুল।