গাজীপুরে দুই হাজারের বেশি তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে; এতে কাজ করেন অন্তত ২২ লাখ শ্রমিক।
Published : 10 Aug 2024, 10:39 PM
তীব্র গণ-আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন থেকে গাজীপুরে বন্ধ হয়ে যায় বেশিরভাগ তৈরি পোশাক কারখানা। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর খুলতে শুরু করেছে বন্ধ থাকা সব কারখানা।
শতভাগ উৎপাদন কার্যক্রম চালু রাখতে কারখানার নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে ‘সমন্বিত টাস্কফোর্স’। নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে পোশাক খাতকে শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান কারখানা মালিকেরা।
শনিবার সকাল থেকে স্বাভাবিকভাবে চলছে সব কারখানার কার্যক্রম। তবে কারখানা এলাকায় শিল্প পুলিশ কিংবা থানা-পুলিশের কোনো ইউনিটের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
সকালে গাজীপুর মহানগরীর লক্ষীপুরায় স্প্যারো অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানা পরিদর্শন করেন নবম পদাতিক ডিভিশনের কর্মকর্তা কর্নেল আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “শিল্পাঞ্চল এলাকার কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা দিতে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। এ জন্য তৈরি করা হয়েছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স। এ টাস্কফোর্স গাজীপুর, আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তায় কাজ করছে।”
এ সময় তিনি ওই কারখানার কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
কারখানা মালিক ও বিজিএমইএ নেতারা বলছেন, গাজীপুরে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিটে কাজ করছেন শ্রমিকরা। দেশে চলমান সংকটের কারণে কয়েকদিন কারখানায় উৎপাদন বিঘ্নিত হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে পোশাক খাত।
তবে শুরুতে মালিকরা নিজস্ব কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় নিরাপত্তা দিয়ে কারখানা চালু করেন।
মালিকরা জানান, শিল্প এলাকায় শতভাগ কারখানা চালু করা হয়েছে। শ্রমিকদের উপস্থিতিও প্রায় শতভাগ। শিল্প-কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনীর টাস্কফোর্স সেল গঠন করা হয়েছে। সেনা সদস্যদের ব্যাপক টহলের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বিডি কালেকশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান তামান্না ফারুক বলেন, “বিগত সময় পোশাক মালিকেরা অনেক কিছু বলতে পারেননি। মালিক ও শ্রমিকরা দেশের জন্য কাজ করছি, ভবিষ্যতেও করব। নতুন সরকারের সহায়তায় পোশাক রপ্তানিকে এক নম্বরে নিয়ে যাব আমরা।”
‘স্প্যারো অ্যাপারেলস লিমিটেড’ কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম বলেন, “বুধবার থেকে বিজিএমইএ ও সেনাবাহিনীর টাস্কফোর্সের সহযোগিতায় মোটামুটি কারখানা চালু হয়েছে। প্রথম দিকে ৮১ শতাংশ কারখানা খোলা হয়। বৃহস্পতিবার থেকে শতভাগ কারখানা চালু হয়।
“যাদের শিপমেন্ট দরকার ছিল, তারা শুক্রবারও কারখানা খোলা রেখেছিলেন। এত বড় সংগ্রামের পর আমরা শিল্পকারখানা খুলতে পেরেছি। সেনাবাহিনী শিল্প এলাকায় টহল দিচ্ছে। এ ছাড়া শিল্প পুলিশও কাজ করছে।”
এ পর্যন্ত কোনো ক্রয়াদেশ বাতিল হয়নি দাবি করে শোভন ইসলাম বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ইমেজ কাজে লাগিয়ে পোশাক শিল্পে বিশ্বে এক নম্বরে চলে যাব, কোনো শঙ্কা নেই। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো অর্ডার বাতিলের খবর পাইনি।”
কারখানা পরিদর্শনের সময় স্প্যারো অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির অতিরিক্ত সচিব মনসুর খালেদ, শিল্পোদ্যোক্তা তামান্না ফারুক এবং স্প্যারো অ্যাপারেলস কারখানার সিইও শরিফুল রেজা উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুরে দুই হাজারের বেশি তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে; এতে কাজ করেন অন্তত ২২ লাখ শ্রমিক।