লিবিয়ায় ‘আটকে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা’, পরিবারে ‘শঙ্কা’

স্বজনদের অভিযোগ, ওই যুবকদের নির্যাতন করে মোবাইল ফোনে কান্নার আওয়াজ শুনিয়ে টাকা দাবি করছে দালালচক্র।

কে এম রায়হান কবীরশরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2022, 07:20 PM
Updated : 9 Nov 2022, 07:20 PM

লিবিয়ায় আটক রেখে একটি চক্র শরীয়তপুরের তিন যুবকের পরিবার থেকে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

স্বজনদের অভিযোগ, ওই যুবকদের নির্যাতন করে মোবাইল ফোনে তাদের কান্নার আওয়াজ শোনাচ্ছে চক্রের সদস্যরা। 

এই তিন যুবক হলেন শরীয়তপুর সদরের উত্তর ভাষানচর গ্রামের খলিল ফকিরের ছেলে আল আমিন ফকির (২৫), বাদশা খানের ছেলে রাকিব খান (২৩) ও নড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ নড়িয়ার এনামুল হক মাদবরের ছেলে ফেরদৌস মাদবর (১৯)। 

সদরের উত্তর ভাষানচর গ্রামের খলিল ফকির, নড়িয়ার দক্ষিণ নড়িয়া এলাকার বাদশা খান ও স্থানীয়রা জানান, ২০২২ সালের মার্চে  উত্তর ভাষানচর গ্রামের হাকিম বেপারীর ছেলে হাবিবুর রহমান বেপারী ইতালি পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে আল আমিন ফকির, রাকিব খান ও ফেরদৌস মাদবরের প্রত্যেক পরিবারের সঙ্গে ১০ লাখ টাকা করে চুক্তি করেন। 

এরপর তাদের লিবিয়ায় নিয়ে আটকে রেখে তাদের ওপর নির্যাতন চালায় এবং সেসব নির্যাতন ও কান্নার ছবি ও ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। 

দালালদের দাবি পূরণ করতে গিয়ে পরিবারগুলো ভিটে-মাটি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। এখন আবার আরও ১০ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে বলে তারা জানান। 

বাদশা খানের মা কমলা বেগম বলেন, “পাশের বাড়ির হাবিব বেপারী আমার ছেলেকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে ৯ মাস আগে লিবিয়া নিয়ে যায়। নেওয়ার সময় ৫ লাখ টাকা দেই। লিবিয়া পৌছনোর পর জমি বিক্রি করে আরও পাঁচ লাখ টাকা দেই।” 

এখন মোবাইলে নির্যাতনের ছবি পাঠিয়ে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করছে বলে কমলা জানান।

 আলামিনের মা মনজিলা বেগম বলেন, “এমনিতেই আমাদের সংসার চলে না; তারপরও উন্নত জীবনের আশায় দালালকে ১০ লাখ টাকা দিলে দালাল লিবিয়া নেয় ছেলেকে। সেখানে আমার ছেলেকে আটক রেখে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করছে।” 

এ ব্যাপরে থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। 

আংগারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, “এসব বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি।” 

পালং মডেল থানার ওসি জানান, এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।