চালক ‘সেজে’ শিক্ষার্থী অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, গ্রেপ্তার ৭

শ্যালককে নিয়ে অপরাধীদের একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে মামুন নামে এক ব্যক্তি, যে দলের বেশির ভাগই গাড়িচালক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2024, 02:24 PM
Updated : 24 March 2024, 02:24 PM

ঢাকার ধানমন্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় ওই পরিবারের গাড়িচালকসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

ভগ্নিপতিকে সঙ্গে নিয়ে কামরুল হাসান নামের ওই গাড়িচালক স্কুলে যাওয়ার পথে ওই শিক্ষার্থীকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে অপহরণের নাটক সাজায় এবং দেড় কোটি টাকা দাবি করে ১৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে।

এ ঘটনায় থানায় মামলার পর গোয়েন্দা পুলিশ অপহরণের রহস্য উদঘাটন করে বলে রোববার সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এ ঘটনায় গাড়ি চালক কামরুল (২৮) ও তার ভগ্নিপতি আবদুল্লাহ আল মামুনসহ (৩৭) সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। কামরুলের সহাযোগিতায় মামুন এ অপহরণের পরিকল্পনা করে।

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন- নূর আলম (৩০), রনি মিয়া (৩০), মনির হোসেন (৩২), জনি বিশ্বাস (৪২) ও আসলাম হাওলাদার (২৮)।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা প্রধান হারুন বলেন, গত ২০ মার্চ সকালে ধানমন্ডি মাস্টারমাইন্ড স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ১১ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী তাদের ব্যক্তিগত চালকসহ অপহৃত হন। পরে অপহরণকারীরা দেড় কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে দুইজনকেই হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।

ওই দিনই সমঝোতা করে ১৪ লাখ টাকা অপহরণকারীদের হাতে তুলে দিলে বিকালের দিকে চালক ও শিক্ষার্থী মুক্তি পান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৭টায় স্কুলের সামনে পৌঁছামাত্র মোটরসাইকেলে আসা অপহরণকারীরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে প্রাইভেট কারটি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং চালক ও শিক্ষার্থীকে নিয়ে সাভারের গেন্ডায় চলে যায়। পরে শুধু প্রাইভেট কারটি বসিলা ব্রিজের কাছে ওয়াশপুরে রাস্তার উপর চাবিসহ রেখে যায়।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন বলেন, এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় মামলা হওয়ার পর গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করা হয়। তদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায় চালকই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। পরে কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মামুনের নাম তুলে ধরে ডিএমপির ডিবি প্রধান বলেন, মামুনের একটি বড় সিন্ডিকেট রয়েছে। তিনি নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ চক্রের সদস্যদের বিভিন্ন জায়গায় ব্যক্তিগত বা কোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরি দিয়ে তাদের দিয়ে অপরাধ করায়। তার দলের অধিকাংশই গাড়িচালক।

হারুন বলেন, ধানমন্ডির এ শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় মামুন তার শ্যালক কামরুলকে ব্যবহার করে। গ্রেপ্তার সাতজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে।