টেকনাফে ‘অপহরণকারী চক্রের’ দুইজন গ্রেপ্তার, দলনেতা ‘চিহ্নিত’

গত এক সপ্তাহে টেকনাফে ১৫ জন আর এক বছরে শতাধিক মানুষ অপহরণের শিকার হয়েছেন।

টেকনাফ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2024, 01:00 PM
Updated : 29 March 2024, 01:00 PM

কক্সবাজারের টেকনাফে গত এক সপ্তাহে ১৫ জনকে অপহরণের ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে চক্রের প্রধানের নাম জানতে পারার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

তার নাম প্রকাশ না করলেও দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে।

বৃহস্পতিবার ভোরে টেকনাফের জাহাজপুরা পাহাড়ে অভিযানে চালিয়ে দুজনকে ধরা হয় বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি।

তারা হলেন হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং এলাকার মো. নবী সুলতান নবীন ও বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর শিলখালী এলাকার মো. ছলিম।

নবীকে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং ২২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উত্তর পাশে পাহাড় থেকে এবং ছলিমকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। পরে তাদেরকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

অভিযানে একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শ্যুটার গান (এলজি) ও বিভিন্ন আকারের বড় আটটি দা উদ্ধারের কথাও জানানো হয়েছে।

এর আগে মধ্যরাতে জাহাজপুরা পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে অপহৃত  ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, ছলিম ডাকাতি মামলায় ৩ মাস আগে জামিনে কারাগার থেকে বের হয়েছিলেন।

ওসি ওসমান গণি বলেন, অপহৃত একজনের বাবা তার ছেলেকে ধরে নেওয়ার ঘটনায় মামলা করেছেন, মামলা করেছে পুলিশও।

সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুই জনকে রিমান্ডে চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দুজন গত ২১ মার্চ হ্নীলার পানখালীর পাহাড়ি এলাকা থেকে পাঁচজন, ২৬ মার্চ হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকা থেকে দুজন এবং বুধবার হোয়াইক্যংয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে আটজনকে অপহরণের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন ওসি।

অপহরণকারী চক্রটি পাহাড়ের গহীনে বেশকিছু স্থানে আস্তানাও তৈরি করেছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন এই দুই জন।

ওসি ওসমান গণি বলেন, “অপহরণকারীরা পাহাড়ে থাকা ফসলের মাঠ দখল করতে চায়। কৃষকরা যেন সেখানে না যান সেজন্যই তারা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাইছে।”

দুই জনের কাছ থেকে অপহরণকারী চক্রের হোতাসহ জড়িত অনেকের নাম-ঠিকানা পাওয়া গেছে জানিয়ে তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাসও দিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য বলছে, গত এক বছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা শতাধিক মানুষ অপহরণের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫৯ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা।

ভুক্তভোগীদের স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫১ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন।

গত ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে গত ২০ দিনেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

অপহরণে ব্যবহৃত অটোরিকশার চালক ও চক্রের নারী সদস্যসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তারের কথাও জানিয়েছে পুলিশ। তারা সবাই রোহিঙ্গা।

ওসি ওসমান গণি বলেছেন, তারা ছোয়াদের অবস্থান শনাক্ত করতে পেরেছেন। দ্রুত একটি ‘শুভ বার্তা’ দেওয়ার বিষয়েও আশাবাদী তিনি।